শুরুতে কিছু বুঝে উঠার আগেই গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে সেই গোল শোধ করে সহজেই শেষ আটে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ এসেছিলো, কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন ভিনিসিয়ুর জুনিয়র। অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানে নাটকীয়তার পর শেষ আট নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
বুধবার (১২ মার্চ) রাতে নিজেদের মাঠে কনর গ্যালাহেরের ৩০ সেকেন্ডে করা গোলে মূল ম্যাচ অ্যাতলাটিকো ১-০ ব্যবধানে জিতলেও দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান হয় ২-২। অতিরিক্ত সময়েও কেউ গোল না পাওয়ায় খেলা গড়াই টাইব্রেকারে। তাতে ৪-২ গোলে জিতেছে রিয়াল। পেনাল্টি শ্যুট আউটে অ্যাতলেটিকোর হুলিয়ান আলভারেজের শট বাতিল হয় দুই পায়ের টাচের কারণে। এর বাইরে লরেন্তে ব্যর্থ হন গোল করতে। রিয়ালে লুকাস ভাসকেস ছাড়া বাকি সবাই পান গোল।
আর রিয়ালের এই জয় ভিনিসিয়ুসকে বাঁচিয়ে দিয়েছে ট্র্যাজিক হিরো হওয়া থেকে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র বরাবরই বড় ম্যাচের তারকা। সেমিফাইনাল-ফাইনালে বরবারই এগিয়ে এসে দলের দায়িত্ব নিতে দেখা গেছে তাকে। আজকের ম্যাচটা শেষ ষোলোর হলেও গুরুত্ব এর চেয়ে কম ছিল না। তবে এবারের চিত্রনাট্যটা লেখা হয়েছে ভিন্নভাবে। যেখানে লেখা ছিল না ভিনির নায়ক হওয়ার কথা। এমনকি পেনাল্টি মিস করার কারণে হতে পারতেন ভিলেনও। কিন্তু সতীর্থরা তাকে এবার বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
আতলেতিকোর মাঠে প্রথম লেগের লিড হারাতে এক মিনিটও লাগেনি রিয়ালের। ম্যাচ শুরু হতে না হতেই দারুণ এক আক্রমণ থেকে গোল করেন কনর গ্যালাগার। চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি আতলেতিকোর সবচেয়ে দ্রুততম গোল। আর রিয়ালের জন্য এটি ২০১০ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে তাদের হজম করা দ্রুততম গোল। এই গোলের পর রিয়াল রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে আতলেতিকোর ওপর। আতলেতিকোও অবশ্য ছেড়ে কথা বলেনি।
দারুণ প্রেসিংয়ে পাল্টা জবাব দেয় তারাও। দুই দলের এমন আক্রমণাত্মক মনোভাবের কারণেই রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে দ্বৈরথ।
তবে রিয়ালের আক্রমণগুলো আতলেতিকোর বক্সে এসে বারবার খেই হারাচ্ছিল। অন্য দিকে পাল্টা আক্রমণে আতলেতিকোও চেষ্টা করছিল সুযোগ তৈরির। ২৫ মিনিটে দুর্দান্ত গোলকিপিংয়ে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া। ৩৫ মিনিটে আরও একবার গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল আতলেতিকো। তবে এবারও অল্পের জন্য হতাশ হতে হয় স্বাগতিকদের। একটু পর ফের আলভারেজকে হতাশ করেন কোর্তোয়া।
বিরতির পরও রিয়ালকে চেপে ধরে আতলেতিকো। শুরুর দিকেই একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। যদিও গোল পাওয়া হয়নি। সুযোগ পেয়েছে রিয়ালও। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে তারাও। তবে … মিনিটে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। প্রতি-আক্রমণ থেকে আতলেতিকোর দুই ডিফেন্ডারকে নাকাল করে ঢুকে পড়েন আতলেতিকো বক্সে। উপায় না দেখে ফাউল করেই তাকে থামাতে হয় লেংলেকে। তবে নাটক তখনো আরও বাকি। পেনাল্টিটা মিস করে বসেন ভিনি। শট নিয়ে বল পাঠান অনেক বাইরে দিয়ে।
রিয়াল সুযোগ মিস করায় সমতাতেই এগিয়ে চলে ম্যাচ। দুই দলই এ সময় সুযোগ পেয়েছিল এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু এরপর নির্ধারিত সময় এবং অতিরিক্ত সময়েও কোনো দল আর গোল পায়নি। যে কারণে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যেখানে বাজিমাত করে রিয়াল।