জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের আগ্রহ দলে দলে

এবার জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের আগ্রহ দেখা দিয়েছে প্রায় প্রতিটি দলেই। আগস্টের পর ক্রিয়াশীল প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকেও বসেছেন। তুলনামূলক ছোট দলগুলো চাইছে রাজনীতির মাঠে নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে। আর বড় দলগুলোর চিন্তা কিছু ছাড় দিয়ে হলেও ক্ষমতার মসনদে বসা। এমনকি ছাত্রদের আসন্ন নতুন দলও জোট করতে চাইলে সেটা বিবেচনায় রাখছে।

দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সভা, সমাবেশ শুরু করেছে। সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টায় মাঠের লড়াইয়ে প্রতিযোগিতায় দলগুলো।

শুধু ভোটারদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা নয় বরং ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলো নিজেদের মধ্যেও বোঝাপড়ার কাজটা সারছেন। সমমনা কিংবা জোটভুক্ত দল ছাড়াও তুলনায় ছোট দলগুলোর সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হচ্ছেন গোলটেবিলে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘অতীতে যে রাজনৈতিক কালচার ছিল প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ নেওয়া, একে অপরকে আঘাত করা এসব থেকে আমরা এখন বের হয়ে আসতে চাচ্ছি। আমরা রাজনীতিতে গুণগত পরির্বতন চাচ্ছি। দেশকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছি। সেটা একক দলের পক্ষে সম্ভব না সবাইকে মিলেই করতে হবে।’

সম্প্রতি প্রায় সব দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছে ইসলামপন্থি দল খেলাফত মজলিস।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা কথা বলেছি কিন্তু এটার সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। আগের মতো একটা সিট দুটা সিট দিয়ে বিদায় করে দেওয়া সেটা এবার হবে না।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী এবং ছোট দলগুলোর সমর্থন ছাড়া কেউ ক্ষমতায় গেলে বেকায়দায় পড়তে পারে বলে মনে করছে গণঅধিকার পরিষদ।  গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর বলেন, ‘আগামীতে যারা সরকার গঠন করবে তাদের প্রতি যদি রাজনৈতিক দলগুলোর বড় অংশের সার্পোট না থাকে তাহলে তাদেরও সরকার চালাতে হিমশিম খেতে হবে। এখনকার শুধু সংকট না নির্বাচন পরবর্তী নানা ধরনের সংকট তৈরি হবে।’

ছোট দলগুলোর গুরুত্ব বাড়ছে উল্লেখ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এবার ভোটের মাঠে এর প্রভাব দেখা যাবে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘রাজপথের চেয়ে রাজনীতি পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া। সেখানেই সব ধরনের ডিবেট হবে। এই কারণে নতুন গঠিত হওয়া দল তাদের এই কারণে গুরুত্ব বেড়ে যাচ্ছে।’

এদিকে গণতন্ত্রের পক্ষের ও ফ্যাসিবাদবিরোধী যেকোনো দলের সঙ্গে জোট করতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘একটা ঐক্য, একটা সমঝোতা, একটা জোটবদ্ধ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা, আগ্রহ, আকুতি যেন বেড়েছে। এমন একটা পরিবেশ হলে আমরাও দেখা গেল কোনো দলের জোটে চলে গিয়েছি।’

নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার গঠনে সব দলকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ। বলেন, শিক্ষার্থীরা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে চাইলে বিবেচনা করবে বিএনপি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

হাফিজ বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই সেটি নিশ্চয় আমাদের দল বিবেচনা করবে। সব দলের প্রতি আমাদের সমান সুদৃষ্টি থাকবে। আমরা সবাইকে রাজনীতির মাঠে ওয়েলকাম করি। নির্বাচনে যদি বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তাহলে আমরা অন্যদলের সঙ্গে জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.