জুলাই হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় মদদে, বিচার চায় জাতিসংঘ

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দমাতে শেখ হাসিনাসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। সরকারের মদদেই জুলাইয়ের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হয়েছিল বলে জানান তিনি।

বুধবার (৫ মার্চ) জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের করা প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় এসব তথ্য দেন ভলকার তুর্ক।

২০২৪ সালের জুলাইতে শুরু হওয়া সরকারি কোটা সংস্কারের আন্দোলন সংহিসতার জেরে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলন ঠেকাতে ব্যাপক দমন পীড়ন চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। তীব্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

জুলাই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত দল অনুসন্ধান চালায়। ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই তথ্যানুসন্ধানের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংগঠিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন, বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিলেন বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছিল।

বুধবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টার পর জেনেভায় বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ভলকার তুর্ক।

সেখানে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দমাতে শেখ হাসিনাসহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিলেন বলে জানান তিনি।

তবে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলেও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নন বলে জানান ভলকার তুর্ক।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার আরও জানান, গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার তথ্যও মিলেছে।

অভ্যুত্থানে অনেক তরুণ আহত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি তাদের জরুরি চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতে গুরুত্ব দেন।

ভলকার তুর্ক বাংলাদেশে সংস্কারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে একটি নতুন ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। এই প্রচেষ্টা জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.