জুলাই শহিদ ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৬৩৮ কোটি টাকা

ডিসি সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের সহায়তাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭৪৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৩৪২ কোটি টাকা চলতি সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর সংস্কার কার্যক্রমসহ নিহত ও আহতদের সার্বিক সহায়তায় আগামী (২০২৫-২৬) বাজেটেও ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। এই বরাদ্দ থেকে সহায়তা ও রাষ্ট্রের সংস্কার কার্যক্রম চলছে। সংস্কার কর্মসূচিতে বরাদ্দ থাকছে ১০৯ কোটি টাকা। বাকি ৬৩৮ কোটি টাকা শহীদপরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে আর্থিক খাতের এ চিত্র তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সম্মেলনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিংসহ মোবাইল কোর্ট অভিযান জোরদার ও অর্থ সংকট মোকাবিলায় রাজস্ব আদায় বাড়ানোর নির্দেশনা থাকছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শহিদদের ‘জুলাই শহিদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান শুরু করেছে। এ জন্য চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ২৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ পাবেন শহিদ পরিবারের ৮২৬ জন সদস্য এবং আহতরা। তবে আহতদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা দ্রুত প্রকাশিত হবে। এ অর্থ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিটি শহিদ পরিবারকে ১০ লাখ এবং গুরুতর আহতদের ‘ক্যাটাগরি এ’-তে অন্তর্ভুক্তদের ২ লাখ টাকা এবং ‘ক্যাটাগরি বি’ যোদ্ধাদের ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।

এছাড়া সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ থাকছে ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে প্রতিটি শহিদ পরিবার পাবেন ২০ লাখ টাকা। আহতদের মধ্যে ‘ক্যাটাগরি এ’-তে অন্তর্ভুক্ত ৩ লাখ টাকা এবং মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। এছাড়া ‘ক্যাটাগরি বি’ যোদ্ধাদের জন্য ২ লাখ টাকা এবং মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে।

অগ্রাধিকার পাচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ : অর্থ উপদেষ্টা মনে করেন এই মুহূর্তে দেশের অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এরমধ্যে ঘনিয়ে আসছে রোজা। একশ্রেণির ব্যবসায়ী প্রতিবছর নানা অজুহাতে রোজার বাজার অস্থিতিশীল করে তুলেন। ফলে রোজার আগে ডিসি সম্মেলনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ডিসিদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দেবেন অর্থ উপদেষ্টা। বিশেষ করে বাজারে নিয়মিত টাস্কফোর্স অভিযান নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা কোল্ডস্টোরেজ এবং গুদামঘর মনিটরিং জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হবে ডিসিদের। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য নিজ নিজ জেলার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হবে।

জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন পরিচালনায় ডিসিদের সহায়তা : জুলাই আগস্টে সংঘটিত ছাত্র জনতার আন্দোলনে শাহাদত, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিদের কল্যাণে এবং তাদের পরিবারকে আর্থিক, মানবিক, কর্মসংস্থান ও চিকিৎসা সুবিধার জন্য ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়। এ ফাউন্ডেশনের প্রতিদিনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আগামীতে এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ডিসিদের সহায়তা চাইবেন অর্থ উপদেষ্টা। ফাউন্ডেশন ছাড়া জুলাই অভ্যুত্থান কেন্দ্রিক তারুণ্য উৎসব অনুষ্ঠানে ৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ছাত্র জনতার আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ, বিভিন্ন প্রকাশনার জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

You might also like

Comments are closed.