জুনে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা

ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। ইতোমধ্যে মে মাসে এ বছরের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৭৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা জুনে ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, রয়েছে ভ্যাপসা গরম। এমন আবহাওয়া এডিস মশার বংশবৃদ্ধির জন্য খুবই অনুকূল। ঈদুল আজহার আগে বাসাবাড়িতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ঠিকঠাক হবে না। ফলে ঈদের পর ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারে।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ
তিন থেকে পনেরো দিনের মধ্যে ভাইরাস বহনকারী এডিস মশার কামড়ে যে কারোরই ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ কারণে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো সবারই ভালোভাবে জানা উচিত। এই উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে-

জ্বর ১০২ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে, মাথাব্যথা, বমি, চোখের পেছনে ব্যথা, চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ), শরীরে শীতলতা অনুভব করা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্বাদের পরিবর্তন, হৃদস্পন্দনের হার ও রক্তচাপ কমে যাওয়া এবং পেশিতে ও গাঁটে ব্যথা হওয়া।

ডেঙ্গু রোগের ধরন
চিকিৎসকদের মতে, মানুষের সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু জ্বর হয়- ক্ল্যাসিকাল ও হেমোরেজিক। ক্ল্যাসিকালে জ্বর সাধারণত দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। বিপদ ঘটে হেমোরেজিকের ক্ষেত্রে। এই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা পাঁচ থেকে সাত দিন পর মারাত্মক সংকটাপন্ন হতে পারে।

হেমোরেজিকের ক্ষেত্রে রোগীর রক্তপাত হয়, রক্তে অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমা কমে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার দেখা দেয় ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এতে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে হ্রাস পায়। কিছু সময় আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ, দাঁতের মাড়ি এবং নাক থেকে রক্তপাত ঘটে। মলের সঙ্গেও মাঝে মাঝে রক্ত বের হতে পারে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সময়ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। এমনকি কারো কারো রক্তের প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা কমে গিয়ে শরীরের চামড়ার নিচে ইন্টারনাল ব্লিডিং হয়। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যখন রোগীর হাত-পা দ্রুত ঠান্ডা হওয়া শুরু করে এবং রক্তচাপ কমে যায়।

আক্রান্ত ব্যক্তি এ সময় মাত্রাতিরিক্ত ঘামা শুরু করে। এতে তার মধ্যে এক ধরনের ছটফটানিও আরম্ভ হয়। কেউ কেউ বমি করে বা তাদের বমি বমি ভাব হয়। এই সময়টায় কোনো কোনো রোগীর হোয়াইট ব্লাড সেল স্বল্পতা, ইলেক্ট্রোলাইটের অসমতা, লিভারে সমস্যা, অথবা ব্রেনে রক্তক্ষরণের মতো ঘটনা ঘটে। এতে তাদের শকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুঃখজনক হলো, এর ফলে অনেক রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।

You might also like

Comments are closed.