জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আপত্তি কোথায়: আলাল

বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, নির্বাচন আগে নাকি সংস্কার আগে একথা যারা বলেন, তাদেরকে বলব, সংস্কার হচ্ছে একটা অন্তহীন প্রক্রিয়া। যতদিন পৃথিবী থাকবে, এদেশ থাকবে, ততদিন সংস্কার চলমান থাকবে। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রাণের আকাঙ্ক্ষা, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে একটি ভোট দেওয়া, সেটা পূরণ করতে আপত্তি কোথায়?

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত ধর্মের নামে ব্যবসা ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নাগরিক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।

মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে যদি একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তাদের কাছে যে শক্তি, সাহস ও দক্ষতা থাকবে তা দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যেগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে অনেক সমস্যা আছে বলেই বিএনপির পক্ষ থেকে দুই বছর আগে জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে সংস্কার কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। আজকে এই সরকারও সংস্কারের কথা বলছে।

আলাল বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ছোট্ট বন্ধুরা, শিক্ষার্থীরাও সংস্কারের কথা বলছে। আমরা সেই সংস্কারের জন্যই একত্রে, এক মিছিলে, এক কাতারে শামিল হতে চাই। যেখানে ইসলামপন্থী দলগুলো থাকবে। আবার অন্য ধর্মের মানুষরাও থাকবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার, সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে যারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তারাই সেখানে থাকবে। এখানে বিভাজন করার কোনো সুযোগ নেই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আমরা আপনাদেরকে সম্মান করি। আমরা আপনাদের অবদানকে স্বীকার করি। একই সঙ্গে বলি যারা অভিজ্ঞ, যারা দেশ পরিচালনা করেছে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা নেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন  আরও বলেন, ধর্মের নামে, সংখ্যালঘুদের নামে ৫০ টি সংগঠন আগে থেকেই বাংলাদেশে ছিল। নতুন করে আরও ১৩ টি প্ল্যাটফর্ম দাঁড়িয়েছে। ধর্ম নিয়ে হানাহানি, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কেনো! বেশি প্রয়োজন হচ্ছে যার যার ধর্ম সুন্দরভাবে এবং স্বাধীনভাবে পালন করা। দেশের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকারের দিকে মনোযোগ দেওয়া। আমরা আশা করি সেই প্রয়োজনের কেন্দ্রবিন্দুতে বিএনপি আপনাদের সঙ্গে সবসময় থাকবে।

বিএনপি চেয়াপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে ৭১ সালে যারা পাকিস্তানকে অখন্ড রাখতে চেয়েছিল, তাদের রাজনীতি ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং তারা সেই ভুলের মাশুল এখনো দিচ্ছে।

তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে কৃষক দলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈমের সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ। আরও বক্তব্য দেন তাতীদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কৃষকদলের কাদের সিদ্দিকী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বিলকিস খন্দকার, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম প্রমুখ।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.