চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধে মধ্যস্থতাকারী হবেন ইলন মাস্ক!

বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধে চীন ও ট্রাম্পের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন ইলন মাস্ক। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ গাড়ি তৈরি করে মাস্কের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি টেসলা এবং গোটা বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুচ্চালিত বা ইভি গাড়ি তৈরি করে কোম্পানিটি।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে অভিষেক হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের। এখন, ট্রাম্পের নতুন বিএফএফ বা ‘বেস্ট ফ্রেন্ড ফরএভার’ ইলন মাস্কের সঙ্গে ও চীনা নেতৃত্বের সম্পর্কের ধরনটা কী হবে সেটি রয়েছে সবার নজরে।

টেসলা’র সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাই। এজন্য মূলত ধন্যবাদ পেতে পারেন শহরটির কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সেক্রেটারি লি কিয়াং। চীনের প্রধানমন্ত্রী তিনি।

সাংহাইভিত্তিক ‘অটো মোবিলিটি লিমিটেড’-এর প্রধান নির্বাহী বিল রুসো বলেছেন, চীনের দুই নম্বর ব্যক্তি কিয়াং। তার সমর্থনই সাংহাইয়ে টেসলার জন্য সবকিছু সম্ভব করে তুলেছিল। ২০১৭ সালে চীন স্বচালিত শিল্পের জন্য নিজেদের নীতি নির্দেশিকাও সামঞ্জস্য করেছে, যাতে বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানি চীনে তাদের কারখানার মালিকানা পেতে পারে। ২০১৮ সালে সাংহাইতে কোম্পানি চালুর জন্য দেশটির সঙ্গে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে টেসলা এবং ২০২০ সালে সেখানে মডেল ৩ গাড়ির উৎপাদন শুরু করে কোম্পানিটি।

খুব দ্রুত এমনকি রেকর্ড সময়ের মধ্যে টেসলা কারখানাটি চালু করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

গত বছরের এপ্রিলে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে কিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করেন মাস্ক। ওই সময় এক এক্স পোস্টে মাস্ক লিখেছিলেন, “চীনের প্রধানমন্ত্রী কিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। আমরা একে অপরকে বহু বছর ধরে চিনি, সাংহাইয়ের প্রথম দিন থেকে।

সব দিক থেকেই বৃহস্পতির তুঙ্গে রয়েছে মাস্ক-চীনের সম্পর্ক। ২০২৩ সালের নভেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। সেসময় তিনি মাস্কের সঙ্গেও দেখা করেন।

তাইওয়ানের মর্যাদা নিয়েও বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন মাস্ক। দুই বছর আগে মাস্ক বলেছিলেন, তাইওয়ানের ওপর চীনকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা প্রশমন করা যেতে পারে। আর এতেই খেপে উঠেছিলেন তাইওয়ানের নেতারা।

এতে চীনের কী হবে: একটি হিসাব পরিষ্কার, মাস্কের চীনকে প্রয়োজন ও আগামী মাসগুলোতে দেশটিরও প্রয়োজন হতে পারে মাস্কের। এতে করে সহজ সমাধান হচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধের মুখে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও ট্রাম্পের মধ্যে এক মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করতে পারেন মাস্ক।

চীনে ইভি শিল্পের পথিকৃৎ ছিলেন মাস্ক। তবে এখন বিওয়াইডি ও নিও’র মতো চীনের স্থানীয় গাড়ি নির্মাতার সঙ্গে রীতিমতো প্রতিযোগিতা করতে লড়াই করতে হচ্ছে তাকে।

মাস্ক ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্ক ভবিষ্যতে অস্থির হয়ে উঠলেও আপাতত মাস্কই লাভবান হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেইজিংয়ের ‘তাইহে ইনস্টিটিউট-এর চীনা ধারাভাষ্যকার আইনার টানজেন বলেছেন, বন্ধুদের জন্য আলাদা কিছু করতে ডনাল্ড ট্রাম্পের কখনও সমস্যা হয়নি। এটা তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই। তিনি ক্ষমা করতে পারার পাশাপাশি তার পছন্দমতো মানুষ ও কোম্পানিকে সাহায্য করতে পারেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.