চীন ছাড়াও অন্তত ২৮ দেশে করোনাভাইরাস!
সারা বিশ্বে ক্রমে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে। চীনে রোগটি প্রথম অবস্থায় ছড়ালেও এখন চীনের বাইরে অন্তত দেড় হাজার করোনাভাইরাস আক্রান্তে সন্ধান পাওয়া গেছে। এতে চীন ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশে করোনাভাইরাস পৌঁছেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দুই হাজার ৪৫৮ জনে ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ৭৮ হাজার ৫৭২ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছে।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৫৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অন্তত চার জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, রবিবার নতুন করে ১২৩ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৬ জনে। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানসহ যে কোনো জনসমাগম এড়িয়ে চলতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী চুং সায়ে-কিউন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর দায়েগুর একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং একটি হাসপাতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ইরানে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ছয় জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। মধ্যপ্রাচ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক দিন আগেই সতর্ক করেছে, গরিব দেশগুলোতে একবার যদি করোনাভাইরাস ঢুকে পড়ে, তা হলে তা মহামারির মতো ছড়াবে। তখন করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনা গরিব দেশগুলোর পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
জাপান উপকূলে প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৬৩৯ জনসহ দেশটিতে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭২ জনে।
ইতালিতে করোনায় অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে। শনিবার দেশটিতে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫ জনে। তাদের মধ্যে ৩৯ জনই দক্ষিণাঞ্চলীয় লোমবারডি অঞ্চল এবং ১২ জন ভেনেতো অঞ্চলের বাসিন্দা।
সংক্রমণ ঠেকাতে মিলানের দক্ষিণের ১০টি গ্রামে সব ধরনের ‘পাবলিক অ্যাক্টিভিটিজ’ আপাতত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে গলেরা জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই চীনের মূল ভূখণ্ডের, যাদের সংখ্যা অন্তত ৭৬ হাজার। এর বাইরে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ভিয়েতনাম, জার্মানি, ফ্রান্স, মাকাও, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ফিলিপিন্স, ভারতে, রাশিয়া, স্পেন, বেলজিয়াম, কম্বোডিয়া, ফিনল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সুইডেন, মিশর, লেবানন ও ইসরায়েলে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী রয়েছে।