চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডিতে ভর্তি হলো রোবট!

প্রযুক্তি বিশ্ব ফের তাক লাগালো চীন। প্রথমবারের মতো দেশটির একটি হিউম্যানয়েড রোবট ভর্তি হলো ডক্টরাল তথা পিএইডডি প্রোগ্রামে। সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলি তাদের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চীনের সাংহাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি একটি মানবাকৃতির বুদ্ধিমান রোবট সম্প্রতি সাংহাই থিয়েটার একাডেমির নাটক, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রোগ্রামে ডক্টরাল শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হয়েছে। রোবটটির লক্ষ্য হলো জেনেরেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং থিয়েট্রিকাল আর্টসের সংমিশ্রণ আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করা।

২০২৫ সালে সাংহাইতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্মেলনে এই ভর্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি চীনের প্রথম মানবাকৃতির বুদ্ধিমান রোবট, যা ডক্টরাল প্রোগ্রামে ভর্তি হল। চার বছরের এই ডক্টরাল প্রোগ্রামে রোবটটি পাবে সাংগঠনিক ও মৌলিক শিক্ষা, নাট্যশিল্প ও রোবোটিক সিস্টেম, অভিনয়ের অঙ্গভঙ্গি, মানবিক আবেগ ও কগনিটিভ মডেলিং ইত্যাদির প্রশিক্ষণ।

রোবটটি ক্লাসরুমেও অংশ নেবে এবং গবেষণার কাজে যুক্ত হবে। সেইসঙ্গে শিখবে নাটকের বিভিন্ন তত্ত্ব। পরে অবশ্য এর জায়গা হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পারফর্মিং আর্টস সংযুক্ত গবেষণাগারে।

“সুয়ে বা ০১” নামের রোবটটিকে সাংহাই থিয়েটার একাডেমিতে নাট্যকলা বিষয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি করানো হয়েছে। ভর্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় সম্প্রতি সাংহাইতে অনুষ্ঠিত ২০২৫ ওয়ার্ল্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কনফারেন্সে।

রোবটটি হালকা ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতাসম্পন্ন। এই রোবটটির নির্মাতা হচ্ছেন লি লিংতু ও তার দল। সাংহাই ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক এবং ড্রয়েডঅ্যাপ নামের একটি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা লি লিংতু। রোবটটির নকশা করেছেন সাংহাই থিয়েটার অ্যাকাডেমির অধ্যাপক ইয়াং ছিংছিং। রোবটটিকে বলা হচ্ছে ‘দেহযুক্ত বুদ্ধিমান কৃত্রিম সত্তা’।

লি লিংতু বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন এক পারফর্মার তৈরি করা, যা মানুষের আবেগ বুঝবে এবং শ্রোতাদের কাছে আবেগপূর্ণ শিল্প উপস্থাপন করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, মানব অভিনেতা একাধিক শো-এর পর ক্লান্ত হয়ে যায়। রোবট তা হবে না। এটি দীর্ঘস্থায়ী সঙ্গী হিসেবেও কাজ করতে পারবে।

চীনা একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একাডেমিসিয়ান ঝাং জিয়ানওয়ে বলেন, “রোবোটিক্স ডক্টরাল প্রোগ্রামটি একটি যুগান্তকারী শিক্ষা পরীক্ষা, যা ‘জ্ঞান ও কর্মের ঐক্য’ প্রয়োজন। রোবট দ্রুত শেখার ক্ষমতা রাখে, যা ভবিষ্যতের শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। তাদের মানুষের, পরিস্থিতি ও শিল্পের বোঝাপড়ায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।”

রোবটটির বিকাশ শুরু হয় ২০২১ সালে। ওই সময় দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আর্টস ও রোবটিক্স প্রযুক্তি নিয়ে যৌথ কৌশলগত সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি চালু হয়। সূত্র: চায়না ডেইলি

You might also like

Comments are closed.