চীনের বিরুদ্ধে হংকংয়ে আবারো বিক্ষোভের ডাক, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

হংকংয়ের উপর নতুন নিরাপত্তা আইন আরোপের পরিকল্পনা করছে চীন। এক চীনা কর্মকর্তা টুইটারে লিখেছেন, গত বছর অঞ্চলটিতে তীব্র গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চীনের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিরা। নতুন আইনটি হংকংয়ের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছেন অনেকে। আইনটির সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, হংকংয়ের উপর আরো নিয়ন্ত্রণ আরোপে চীনের চেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেবে তার প্রশাসন। আইনটি নিয়ে শুক্রবার চীনের পার্লামেন্টে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

খবরে বলা হয়, চীনের নতুন আইন আরোপের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভটি দুপুরে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এই বিক্ষোভের মাধ্যমে সেখানে ফের অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। চীনের পার্লামেন্ট আইনটি আরোপে সম্মত হলে হংকংয়ের জন্য ঐতিহাসিক মোড় নিতে পারে পরিস্থিতি। একইসঙ্গে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উত্তেজনা কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে বাণিজ্য বৈরিতা ও করোনা ইসুতে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়ন চলছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন আইনে হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদা রক্ষার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের স্বায়ত্ত্বশাসন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অঞ্চলটির বৈশ্বিক আর্থিক কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার পেছনে মার্কিন আইনে এর বিশেষ মর্যাদার ভূমিকা রয়েছে। এদিকে, ট্রাম্প বলেছেন, কেউ জানে না চীনের মূল পরিকল্পনা কী। যদি এটা সত্য হয় তাহলে এর বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার পার্লামেন্টে নিজের বার্ষিক রিপোর্ট নিয়ে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, হংকং ও ম্যাকাওতে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সুষম আইনি ব্যবস্থা ও প্রয়োগ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করবে চীন। এর আগে ২০০৩ সালে একইরকম একটি আইন প্রণয়নের চেষ্টা করেছিল চীন সরকার। সেসময় এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে রাস্তায় নেমে এসেছিল প্রায় ৫ লাখ মানুষ। হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থি ও রাজনীতিকরা বহু বছর ধরে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মতো বিষয়গুলোর বিরোধীতা করে আসছেন। তাদের দাবি, এমন আইন শহরটির উচ্চ-পর্যায়ের স্বায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নেবে। প্রসঙ্গত, সাবেক বৃটিশ কলোনি হংকং গত শতকের শেষের দিকে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয়। তবে চীনের অংশ হলেও, ‘এক দেশ, দুই নীতি’ ব্যবস্থার আওতায় বেশ খানিকটা স্বায়ত্ত্বশাসন উপভোগ করে থাকে শহরটি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় শহরটির উপর চীন সরকার প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা তীব্র করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

হংকংয়ের এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, চীনের নতুন আইনটি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি এখনো। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আইনটির আওতায় চীন থেকে শহরটির বিচ্ছেদ, বৈদেশিক হস্তক্ষেপ, সন্ত্রাসবাদ ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হতে পারে। স্থানীয় গণতন্ত্রপন্থিরা আইনটিকে ‘হংকংয়ের অবসান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.