চিরনিদ্রায় শায়িত মাসুম আজিজ
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা, নাট্যকার মাসুম আজিজ। পাবনার এই কৃতি-সন্তানকে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় তার ইচ্ছানুযায়ী জেলার ফরিদপুর পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে মরদেহ ফরিদপুর পৌর সদরের খলিসাদহ এলাকায় পৌঁছায়। এদিন বিকেল তিনটায় ঢাকা থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথ হয়ে মরদেহ নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হন স্বজনরা।
মরদেহ নিজভিটায় পৌঁছালে সেখানে হৃদয়বিদায়ক দৃশ্যের সৃষ্ট হয়। দূর-দূরান্ত থেকে তার ভক্ত-অনুরাগীরা শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেন।
রাত সোয়া ৮টার দিকে মরদেহ নেয়া হয় ফরিদপুর পৌর সদরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজি উদ্দিন খান মুক্তমঞ্চে। সেখানে মাসুম আজিজের মরদেহে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। পরে সাড়ে ৮টায় জানাজা নামাজ শেষে ফরিদপুর পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ফরিদপুরের বনওয়ারীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য শেষবার এসেছিলেন মাসুম আজিজ।
একুশে পদকপ্রাপ্ত মাসুম আজিজ দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের পাশাপাশি হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। ২০১৭ সালে তার হার্টে চারটি ব্লক ধরা পড়ে। তখন তার অস্ত্রোপচার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় অভিনেতাকে স্কয়ার হাসপাতালের ‘লাইফ সাপোর্টে’ নেওয়া হয়। সেখানে সোমবার বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মাসুম আজিজ অভিনেতা ছাড়াও চিত্রনাট্যকার ও নাট্য নির্মাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি থিয়েটারে কাজের মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন।
হুমায়ূন আহমেদের ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, সালাউদ্দিন লাভলুর ‘তিন গ্যাদা’সহ দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি ৪ শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। ‘ঘানি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ২০০৬ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে রাইসুল ইসলাম আসাদের সঙ্গে যুগ্মভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান মাসুম আজিজ। এ বছর (২০২২) তিনি অভিনয়ে একুশে পদক লাভ করেন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।