চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৪ কেজিতে মণ, এবারও জিম্মি আমচাষিরা

গত বছরে আমের ফলন কম হলেও এইবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে। গত বছরে লোকসান পুষিয়ে এবার ভালো দামের আশায় বুক বেঁধেছে আম চাষিরা। তবে বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও আড়ৎদারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় কানসাট আমবাজারে আমচাষিদের জিম্মি করে ৫২ থেকে ৫৪ কেজিতে এক মণ হিসেবে বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের। আর বাড়তি কেজিতে আম বিক্রি না করলে চাষিদের কাছ থেকে কেনাও বন্ধ করে দিচ্ছেন তারা। এক মণ আমে ১২ থেকে ১৪ কেজি বেশি নেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। খোঁজ নিয়ে একই চিত্রের কথা জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর ও ভোলাহাট আম বাজারে।

কানসাটের আমচাষি ময়েজ উদ্দিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমের মণের ওজনের পরিমাণ বাড়তেই আছে। এক প্রকার জিম্মি করেই ৫৪ কেজিতে মণ হিসাবে আম কিনছেন আড়ৎদাররা। বেশি ওজনে আম বিক্রি করতে না চাইলে পুরো সিন্ডিকেট কেনা বন্ধ করে দেয়। তাই নিরুপায় হয়ে আমাদের আম বিক্রি করতে হয়।

কানসাট বাজারের আরেক আম বিক্রেতা সেলিম বলেন, ২০২২ সালের আগে আমরা ৪২ থেকে ৪৩ কেজিতে মণ ধরে বিক্রি করেছি। কিন্তু ২০২২ সালে হঠাৎ করেই ৪৮ কেজিতে মণ ধরে আম কেনেন আড়ৎদাররা। সেই থেকে বছর বছর ওজন বাড়ছে। চলতি বছর ৫২ থেকে ৫৪ কেজিতে মণ ধরে আম কিনছেন। আমরা এখন বিপাকে পড়েছি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, আমরা কষ্ট করে আম উৎপাদন করি। কিন্তু আড়ৎদাররা মণে ১২ থেকে ১৪ কেজি আম বেশি নিচ্ছেন। এ অনিয়ম বিগত কয়েক বছর থেকেই চলছে। আমরা এ সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্তি চাই। মণ প্রতি ১২ থেকে ১৪ কেজি বেশি ধরে যে অতিরিক্ত আম নেওয়া হয়, তার বাজারমূল্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকা বলেও জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বলেন, কানসাট আম বাজারে ওজন নিয়ে সমস্যার বিষয়টি শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমচাষি ও আড়ৎদারসহ সব অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

প্রসঙ্গত, কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৮৬ হাজার টন।

-চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

You might also like

Comments are closed.