চাঁদপুরে সোনালি বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের চরে এবার সোনালী রঙের বাদামের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সাদা বালুর জমিতে লতানো বাদাম গাছে সবুজে ছেয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মতলব উত্তরের ষাটনল ইউনিয়নের ষাটনল, চর চারআনী, এখলাছপুর ইউনিয়নের চরকাশিম, বোরোচর, সুলতানাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, চর-লক্ষ্মীপুর, মোহনপুর ইউনিয়নের বোরোচর, নয়াচরসহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরলে ব্যাপকভাবে বাদামের চাষ লক্ষ করা যায়। ইতোমধ্যেই চাষীরা বাদাম ঘরে তুলে হাট বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার চরাঞ্চলে ২০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে বাসন্তী, সাইস্টোর, বারী চিনাবাদাম-৫, বারী চিনাবাদাম-৬, সিংগাসহ স্থানীয় জাতের বাদামের আবাদই বেশি করা হয়েছে। চরের বালুতে প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ মণ। প্রতিমণ কাঁচা বাদামের বাজার মূল্য ১২শ’ থেকে ১৪শ’ টাকা।
ষাটনল গ্রামের বাদাম চাষী গিয়াস উদ্দিন বলেন, বর্তমানে প্রতিটি বাদাম গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই উঠে আসছে থোকা থোকা সোনালি রঙের বাদাম। এ যেন বালুর নিচে লুকিয়ে থাকা গুপ্তধন। তাছাড়া বালু মাটিতে বাদাম বাদে অন্য কোনো ফসল উৎপাদন করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হয় না। এর সাথে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, অন্য ফসল উৎপাদনের চেয়ে বাদাম উৎপাদনে খরচ কম হওয়ায় চরের সবাই বাদামের চাষ করে। বাদাম রোপণের পর অন্য ফসলের মতো কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। নেই রাসায়নিক সারেরও তেমন ব্যবহার। বীজ রোপণ আর পরিপক্ক বাদাম উঠানোর খরচ ছাড়া তেমন কোনো খরচও নেই বললেই চলে। এই ফসলের আয়ে আমাদের সারা বছরের সংসার চলে।
এখলাছপুর ইউনিয়নের চর কাশিমের বাদাম চাষী জাহাঙ্গীর আলম গাজী বলেন, এক একর জমিতে এবার বাদাম আবাদ করেছি। এ বছর বাদামের বাম্পার ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যেই ছয় বিঘা জমিতে আমি বাদাম তুলে পেয়েছি ৬০ মণ। বাদাম পরিচর্যাতে খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে। আমরা জমি থেকে বাদাম হাটে নিয়ে বিক্রি করছি। গুণগত মান ভালো হওয়ায় এ অঞ্চলের বাদামের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাদাম ব্যবসায়ীরা বাদাম কিনতে আসছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, চরে এ বছর বাদামের আবাদ ও উৎপাদন ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের দানা পুষ্ট হয়েছে। এছাড়া বাদাম গাছে তেমন কোনো রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ ছিল না। এতে কৃষকরা বাদামের বাম্পার ফলন পাচ্ছেন। ভবিষ্যতেও ব্যাপক হারে বাদাম চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে আমরা কাজ করছি।