চট্টগ্রামে মাঝপথে বন্ধ বসন্তবরণ উৎসব, অনুমতি বাতিল
চট্টগ্রাম নগরের সিআরবির শিরীষতলায় আয়োজিত বসন্তবরণ উৎসবের অনুষ্ঠান মাঝপথে বাতিল করেছে আবৃত্তি সংগঠন প্রমা। অনুষ্ঠান চলাকালীন মাঝপতে হঠাৎ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাঠ ব্যবহারের অনুমতি বাতিল করায় বন্ধ করে দিতে হয় এই উৎসব। তবে মাঝপথে অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করার বিষয়ে জানতে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের একাধিকবার কল করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও আবৃত্তি সংগঠন প্রমার আয়োজনে নগরের সিআরবির শিরীষতলায় সকাল ১০টা থেকে বসন্তবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এরপর দেওয়া হয় খাবারের বিরতি। পূর্ব নির্ধারণ অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী বিকাল ৩টা থেকে পুনরায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলার কথা ছিল। এরই মধ্যে দুপুর ২টার দিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে মৌখিকভাবে বলা হয়, অনিবার্যকারণবশত মাঠ ব্যবহারের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এরপর আয়োজকরা অনুষ্ঠান বাতিল করে মঞ্চ গুটিয়ে ফেলেন।
এ প্রসঙ্গে প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতি বছর প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের আয়োজনে সিআরবির শিরীষতলায় বসন্তবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আমরা আগে থেকে অনুষ্ঠানের জন্য রেলওয়ের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলাম। যথারীতি শনিবার সকাল ১০টা থেকে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান। এরপর খাবারের বিরতি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘দুপুরের খাবার বিরতির একপর্যায়ে রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা এসে মৌখিকভাবে বলেন আপনাদেরকে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি অনিবার্যকারণবশত বাতিল করা হয়েছে। আপনাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। আমরাও তাদের নির্দেশনা মেনে মাঝপথেই অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছি। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টায় লিখিতভাবে বন্ধের বিষয়টি জানিয়ে চিঠিও পাঠায় রেলওয়ে। ততক্ষণে আমরা অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেছি। এ কারণে চিঠিটা গ্রহণ করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বসন্ত উৎসবের প্রথম পর্বের শুরুতেই প্রমা অবন্তীর পরিচালনায় ওডিসি অ্যান্ড ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টারের শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া নটরাজ নৃত্যাঙ্গন, নৃত্যানন্দ, নৃত্যরুপ একাডেমি, কৃত্তিকা নৃত্যালয়ের শিল্পীরাও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে একক গান পরিবেশন করেন শিল্পী সোমা রায়, রোজী বিশ্বাস, মাহফুজ আহমেদ, মশিউল আনোয়ার খান। এ ছাড়া আবৃত্তিতে অংশ নেন প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীসহ অন্যান্য সংগঠনের শিল্পী।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, ‘অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোতোয়ালি থানাকে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা কোন ফোর্স আয়োজকদের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়নি। সেখানে প্রতিদিনের মতো মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করেছিল। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে বলে শুনেছি। কেন বন্ধ করে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো না।’