ঘুমের মধ্যে বোবা জিন ধরা নিয়ে ইসলাম কী বলে?
ঘুম মহান আল্লাহ তা’য়ালার অশেষ নেয়ামতগুলোর মধ্যে একটি। এর মধ্যদিয়ে দিনের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাত্রিকে করেছি আবরণ’ (সুরা নাবা, আয়াত: ৯-১০)।
এ ক্ষেত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ছোট্ট দোয়াও রয়েছে, যা প্রায় সবারই জানা। খোদ রাসুল (সা.)-ও এটি পাঠ করতেন। হুযায়ফা ইবন ইয়ামান (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) যখন শোয়ার ইচ্ছা করতেন তখন তিনি একটি দোয়া পাঠ করতেন। দোয়াটি হলো-
اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
বাংলা: আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া-আহ্ইয়াইয়া। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার নামে আমি শয়ন করছি এবং আপনারই অনুগ্রহে আবারও জাগ্রত হবো। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ৩৪১৭; সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৮৮৫)
তবে প্রায়ই ঘুমের মধ্যে অনেকেই নড়াচড়া করতে পারেন না। কেউ কেউ বুকের উপর অদৃশ্য কোনোকিছু চেপে ধরে আছে এমন অনুভব করেন। অনেকেই এটিকে বোবা জিনে ধরা বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। এ বিষয়ে ইসলাম কী বলে?
জনপ্রিয় ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, কুরআন ও হাদিসে বোবা জিনে ধরার মতো কোনো বিষয় নেই। তবে অবশ্যই সবাইকে জিনের অস্তিত্ব স্বীকার করতে হবে। পবিত্র কুরআনে সুরা জিন নামেও একটি সুরা রয়েছে। কিন্তু কুরআন-হাদিসে বোবা জিনে ধরার মতো কোনো বিষয় নেই।
এই ইসলামিক স্কলারের মতে, বিজ্ঞান স্বীকার না করলেও জিনের আছর হওয়াও সঠিক। কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে জিনের রোগীর চিকিৎসা হয়। তবে অনেকে অর্থ আত্মসাতের জন্য মানসিক রোগীকে জিনের রোগী বানানোর ব্যবসা করেন। কিন্তু ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করতে না পারা বোবা জিনের কারণে হয় এমন কথা কুরআন ও হাদিসের কোথাও নেই। তবে যদি জিনের উপদ্রবের কারণে এমন হয়ে থাকে তাহলে হতে পারে, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

Comments are closed.