![](https://multinews24.com/wp-content/uploads/2025/02/Capture-55.jpg)
গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা কাটছে
যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা এড়াতে মিসর আর কাতারের মধ্যস্থতার পর তিনজনের ইসরায়েলে ফেরার পথ খুলেছে। প্রায় এক মাস ধরে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও সম্প্রতি এটি নিয়ে অচলাবস্থা দেখা দেয়।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, গাজা থেকে আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বিনিময়ে ইসরায়েল তার কারাগার থেকে ৩৬৯ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম দফা যুদ্ধবিরতির ৪২ দিনের সময়সীমা পেরোনোর আগেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা কার্যত দূর হয়েছে।
এর আগে হামাসের পক্ষ থেকে আরও জিম্মি মুক্তি না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। সংগঠনটির অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভেঙেছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনে তারা। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় আবারও যুদ্ধ শুরুর হুমকি দেয় ইসরায়েল। দেশটির রিজার্ভ বাহিনীকেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের পাকাপাকিভাবে সরিয়ে দেওয়া ও উপত্যকাটি নিজেদের দখলে নিয়ে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা প্রকাশ করার পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি টিকে থাকার সম্ভাবনা ম্লান হয়ে পড়েছিল। ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ইসরায়েল স্বাগত জানালেও হামাস আর আরব রাষ্ট্রগুলো দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস নারী-শিশু-প্রবীণসহ ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে রাজি হয়। বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে। ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজেদের সেনা সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল।
আজকের আগে পর্যন্ত হামাস ৩৩ জিম্মির মধ্যে ১৬ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। তাদের মধ্যে থাইল্যান্ডের একজন ছিলেন। গাজায় এখনো ৭৬ জন জিম্মি আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের অর্ধেক বেঁচে আছেন।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার প্রথম দফা যুদ্ধবিরতি চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল, গাজা থেকে অবশিষ্ট জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দ্বিতীয় পর্যায়ের শান্তি আলোচনার পথ উন্মুক্ত, চূড়ান্তভাবে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর আগে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এবং খাবার, পানি ও বিদ্যুতের ঘাটতিতে ভোগা গাজার পুনর্গঠন নিশ্চিত করা।
জিম্মিমুক্তি আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়ে হামাস অভিযোগ করেছিল, গাজায় তাঁবু ও সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে বাধা দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে হাজার হাজার মানুষকে তীব্র শীতের মধ্যে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে। ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও তারা হাজারো ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিয়েছে। তারা নয়, বরং হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো বলছে, গাজায় যে পরিমাণ ত্রাণসহায়তা দরকার, সে তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল। এ সহায়তা গাজার মানুষদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না।