গাজার ২১ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মারাত্মক ঝুঁকিতে
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধার ফলে এক ভয়াবহ খাদ্যসংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ উপত্যকার প্রায় ২১ লাখ মানুষ— বিশেষ করে নারী ও শিশুরা— দুর্ভিক্ষের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (IPC)।
ভয়াবহ সংকটের মুখে গাজা
সোমবার (১২ মে) প্রকাশিত IPC- এর সর্বশেষ মূল্যায়নে বলা হয়েছে, গাজায় এখনো পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষ শুরু না হলেও পরিস্থিতির অবনতির ধারা উদ্বেগজনক। খাদ্য সংকট এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, দুর্ভিক্ষ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে গাজার প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ চরম খাদ্যসংকটে ভুগছেন। এ ছাড়া প্রায় ১৯ লাখ ৫০ হাজার মানুষ, যা উপত্যকার ৯৩ শতাংশেরও বেশি, বিভিন্ন স্তরের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশু
আইপিসি সতর্ক করেছে, খাদ্যসংকট চলতে থাকলে আগামী ২০২৬ সালের এপ্রিল নাগাদ গাজার প্রায় ৭১ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। এখনই সেখানে প্রতি পাঁচজনে একজন মানুষ অনাহার বা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
খাবারের জন্য ভিক্ষা
প্রতিবেদনে গাজার মানুষের বেঁচে থাকার জন্য বেছে নেওয়া কষ্টকর বাস্তবতার কথাও উঠে এসেছে। অনেক পরিবার এখন খাবারের জন্য ভিক্ষা করছে, কেউ কেউ আবর্জনার স্তূপ থেকে যা পাচ্ছে, তা বিক্রি করে খাদ্য কিনছে।
যুদ্ধবিরতির ভাঙন
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দুই মাস পর ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করলে আবারও বন্ধ হয়ে যায় ত্রাণ সহায়তার প্রবেশ। ফলে আগের স্বস্তি মুহূর্তেই রূপ নেয় আরেক দফা মানবিক বিপর্যয়ে।
আইপিসি বলেছে, গাজায় বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকট চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে অবিলম্বে কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

Comments are closed.