লোক গবেষক ও কবি আশরাফ সিদ্দিকী আর নেই। বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
আশরাফ সিদ্দিকীর মেয়ে রিফাত আহমেদ মাল্টিনিউজটোয়েন্টিফোরকে বলেন, রাজধানীর ধানমণ্ডির শাহী মসজিদে বাদ জোহর জানাজা শেষে বাবাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আমরা বেশি লোক জমায়েত চাইছি না। এ জন্য বাংলা একাডেমিতে মরদেহ নেয়া হচ্ছে না। আমরা চাই– বাবার জন্য সবাই বাসায় থেকেই দোয়া করবেন।
আশরাফ সিদ্দিকী বেশ কিছু দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এক মাস ধরে শ্বাসনালি ও খাদ্যনালিতে সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছিলও তার।
বিংশ শতাব্দীর ৪০-এর দশকের শুরুতে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ আশরাফ সিদ্দিকীর। তিনি রচনা করেছেন পাঁচশরও বেশি কবিতা। বাংলার লোকঐতিহ্য নিয়ে গবেষণা করেছেন। একাধারে তিনি প্রবন্ধকার, লোকসাহিত্যিক, ছোটগল্পকার ও শিশু সাহিত্যিক। রচনা করেছেন ৭৫টি গ্রন্থ ও অসংখ্য প্রবন্ধ।
ড. সিদ্দিকী বহু পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন। তার মধ্যে ১৯৮৮ সালে সাহিত্যে একুশে পদক, ১৯৬৪ সালে শিশু সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৬৬ সালে সাহিত্যে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার, ইউনেসকো পুরস্কার, লোকসাহিত্য গ্রন্থের জন্য দাউদ পুরস্কার অন্যতম।
১৯২৭ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের নাগরবাড়ী গ্রামে কবির জন্ম। তিনি পড়াশোনা করেন শান্তিনিকেতন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে তিনি আমেরিকার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় এমএ এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
আশরাফ সিদ্দিকী রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, ময়মনসিংহের এএম কলেজ, ঢাকা কলেজ, জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পরে তিনি কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক, ডিস্ট্রিকট গ্যাজেটিয়ারের প্রধান সম্পাদক ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।