খাতুনগঞ্জে কমেছে ছোলা, চিনি, খেজুরের দাম
প্রতিবছর রমজানের আগে খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা চললেও, এ বছর পাল্টে গেছে চিত্র। দাম বাড়ার বিপরীতে উল্টো কমে গেছে ছোলা, চিনি, খেজুরসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক-কর কমানো এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমদানিকারকরা সুযোগ পাওয়ায় বাজারের চিত্র পাল্টেছে। তবে এখন থেকেই বিপণন এবং বাজারে মজুত ব্যবস্থা তদারকির দাবি জানিয়েছেন আড়তদার ও পাইকাররা।
রমজানে দেশে ৬০ হাজার টন খেজুরের চাহিদা, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের প্রতিটি দোকানেই এখন ভরপুর খেজুর। আছে আজওয়া, মেডজুল, জাহেদী, সাফাওয়ি, মরিয়মসহ অন্তত ১০ জাতের। দুবাই, সৌদি আরব, মিশর, আলজেরিয়াসহ বেশ কিছু দেশ থেকে এসেছে এই খেজুর।
শুল্ক কমায় চলতি বছর খেজুর আমদানিতে ব্যয় কমেছে ১৫ শতাংশ। প্রভাব পড়েছে পণ্যের দামেও, সব ধরনের খেজুরের দাম কমেছে।
ফ্রেশ ফ্রুটস এন্ড ডেটস গ্যালারির আমদানিকারক আব্দুল কুদ্দস বলেন, ‘সরকার যদি আগের মতো রমজানের জন্য শুল্ক ফ্রি করে দিতো তাহলে ভালো হতো।’
রমজানে ছোলার চাহিদা এক লাখ টন। এ বছর গেল এক মাসেই পণ্যটির আমদানি হয়েছে ৯৩ হাজার টন। এছাড়াও আগের ছোলাও রয়েছে এবং নতুন আরও পণ্য আসার অপেক্ষায়। সব মিলিয়ে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে অনেকটাই দিশেহারা আমদানিকারকরা। এরই মধ্যে খাতুনগঞ্জে ছোলার দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা। পণ্য এলে দাম আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা তাদের।
মেসার্স সালমা ট্রেডার্সের ম্যানেজার জুয়েল মহাজন বলেন, ‘সব ডাল আমাদের প্রচুর মজুত আছে ও স্টকে আছে।’
চিনির বাজারেও সংকট নেই, গত বছরের তুলনায় কমেছে দাম। রমজানে পণ্যটির তিন লাখ টন চাহিদার বিপরীতে গত এক মাসে আমদানি ১ লাখ ৭৯ হাজার টন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরে ১ লাখ টন চিনি খালাসের অপেক্ষায়।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘দুবাই, থাইল্যান্ড ও ব্রাজিল থেকে পণ্য এখানে আসছে। আর দেশিয় পণ্য তো আছেই আমাদের। সংকটের কারণ এবার দেখছি না।’
রমজানে ভোজ্যতেলের ৩ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৪ লাখ টন। এছাড়াও মোটর ডাল আমদানি হয়েছে এক লাখ আট হাজার টন। এক লাখ টন চাহিদার বিপরীতে মসুর ডাল এসেছে ৬২ হাজার টন। বিপুল আমদানি হলেও শতভাগ মার্জিন দিয়ে ছোট আমদানিকারকদের ঋণপত্র খুলতে হচ্ছে, এতে বড় গ্রুপের সাথে প্রতিযোগিতায় বিপাকে পড়ছেন তারা।
মেসার্স আর হেরামাইন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জাকের সওদাগর বলেন, ‘এলসি খোলার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না ব্যাংক সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু মার্জিন ১০০ ভাগ নিচ্ছে যেটাতে একটু সমস্যা হতো। আগে মার্জিন ৩০ ভাগ দিয়েও খোলা যেত।’
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে ২১৪ জন আমদানিকারক রোজার পণ্য আমদানি করেছেন সেখানে এবার ৩৬৫ জন রোজার পণ্য এনেছেন। এতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।