খরচ বাঁচাতে চীনের প্রযুক্তিতে ঝুঁকছে ভক্সওয়াগেন

জার্মান গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান  ভক্সওয়াগেন  প্রথমবারের মতো তাদের দেশের বাইরে সম্পূর্ণ নতুন গাড়ি তৈরির সক্ষমতা অর্জন করেছে। ভক্সওয়াগেন দাবি করছে, চীনে বৈদ্যুতিক গাড়ি ( ইভি ) তৈরি করলে তাদের ডেভেলপমেন্ট ব্যয় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। সম্প্রতি চীনের আনহুই প্রদেশের হেফেই শহরে প্রথম ‘টেস্ট ওয়ার্কশপ’ চালুর পর এ ঘোষণা দেয় ভক্সওয়াগেন। এই পদক্ষেপকে বৈশ্বিক অটোমোবাইল শিল্পে জার্মানির চিরাচরিত কেন্দ্র থেকে সরে আসার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভক্সওয়াগেনের ‘ইন চায়না ফর চায়না’ বা চীনের জন্য চীনে কৌশলটি এর মাধ্যমে আরও গতি পেল। এই নতুন ডেভেলপমেন্ট কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠানটিকে ‘ইন্টেলিজেন্ট কানেক্টেড ভেহিকল’ স্থানীয়ভাবে তৈরি, পরীক্ষা ও উৎপাদন করতে সক্ষম করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভক্সওয়াগেনের প্রধান নির্বাহী অলিভার ব্লুম বলেন, ‘এই কেন্দ্র আমাদের কার্যক্রমকে আরও দ্রুত ও দক্ষ করে তুলবে।’

 

ভক্সওয়াগেন জানিয়েছে, স্থানীয় প্রযুক্তি ও সরবরাহকারীদের সহায়তা নিয়ে তারা গাড়ির প্রযুক্তি অগ্রগতিতে সময় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারবে।

এই কর্মযজ্ঞের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘ভক্সওয়াগেন গ্রুপ চায়না টেকনোলজি কোম্পানি’ (ভিসিটিসি)। এটি বৈদ্যুতিক ও ইন্টারনেট-সংযুক্ত গাড়ির জন্য সবচেয়ে বৃহৎ গবেষণা ও ডেভেলপমেন্ট কেন্দ্র। স্থানীয় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে ভক্সওয়াগেন চীনের বাজারের অটোনোমাস ড্রাইভিং, ডিজিটাল ককপিট এবং অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম (এডিএএস) প্রযুক্তিতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চায়।

ভক্সওয়াগেন তাদের প্রথম সফটওয়্যার-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘চায়না ইলেকট্রিক আর্কিটেকচার’ (সিইএ) চালু করছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে তৈরি গাড়ি বাজারে আসবে। এক লাখ বর্গমিটার আয়তনের এই গবেষণা কেন্দ্রে সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার পরীক্ষা, ব্যাটারি এবং পাওয়ারট্রেন যাচাইয়ের জন্য শতাধিক ল্যাব রয়েছে। এর ‘ব্যাটারি অ্যান্ড পাওয়ারট্রেন ইন্টিগ্রেশন টেস্টিং সেন্টার’-এ প্রকৌশলীরা প্রতিবছর ৫০০টি পর্যন্ত ব্যাটারি সিস্টেম পরীক্ষা করতে পারবেন।

এই পরীক্ষায় ব্যাটারির কর্মক্ষমতা, আয়ু ও নিরাপত্তাসহ সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। ভক্সওয়াগেনের লক্ষ্য শুধু চীনের অভ্যন্তরীণ বাজার নয়, জার্মান সংস্থাটি এই নতুন কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত গাড়ি মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো উদীয়মান আন্তর্জাতিক বাজারগুলোতে রপ্তানি করার পরিকল্পনাও করছে।

You might also like

Comments are closed.