ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসুন: কাদের
ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যথায় আন্দোলনের নামে বিএনপি দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করলে তা কঠোরভাবে মোকাবিলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।
রোববার বিকালে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ সড়কে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অচিরেই বিএনপির তত্ত্বাবধায়কের স্বপ্ন কর্পুরের মতো উড়ে যাবে। তাদের সুর নরম হবে। কেয়ারটেকার ইজ ডাউন এ ডেড ইস্যু। এটা মৃত, তত্ত্বাবধায়ক মৃত।
এ সময় তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, মৃত ইস্যুকে জীবিত করার অপচেষ্টা করবেন না। উপায় তো নেই। পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসুন। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার পালাবদলের কোনো সুযোগ নেই বাংলাদেশে। নির্বাচনে ঠিক হবে কারা ক্ষমতায় থাকবে আর কারা চলে যাবে। আপনারা বললেই পতন হবে এত সোজা না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল বড় বড় কথা বলছেন। লন্ডনে পলাতক আর রাজনীতি করবে না মুচলেকা দিয়ে চলে গেছে, সেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফখরুল নাকি তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশকে স্বাধীন করবেন।
এ সময় প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ কি দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছিল? বাংলাদেশ কি তৃতীয়বার স্বাধীন হবে? বিএনপি স্বাধীনতার শত্রু। এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। এদের বিরুদ্ধে মোকাবিলা হবে।
দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটকে বিএনপি ‘দুর্ভিক্ষ’ বলে প্রচার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) দুর্ভিক্ষ বলে প্রচার করছে। আমরা জানি উত্তরার সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। আমরা জানি, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি, তেলের দাম-জিনিসপত্রের দাম এখন বাড়তি, তাই গরিব মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই- বিএনপি যতই অপপ্রচার করছে শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না।
এ সময় তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘এ প্যাথলজিকাল লায়ার’ অভিহিত করে বলেন, মির্জা ফখরুল মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত একজন মিথ্যাবাদী।
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব বলেন যে, আমরা এখন আর লাল কার্ড দেখাব না। ১০ তারিখে আমরা বিজয় মিছিল করব না। তারা এখন তা অস্বীকার করে। অস্বীকার তারা মুখে করেন। এটা কৌশল। তারা ঠিকই রাজপথ দখলে আসবে, সেই দখলের বিরুদ্ধে খেলা হবে। আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। কেউ খেলতে এলে জবাব দেওয়া হবে। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হতে বলেন।
নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে রাজপথে খেলা হবে, নির্বাচনে খেলা হবে। আগামী ডিসেম্বরে তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খেলার কোনো বিকল্প নেই। তবে খেলা মানে পালটাপালটি-মারামারি নয়। বিএনপি আগুন নিয়ে খেলতে আসলে খেলা হবে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কাঁচপুরের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলক রাতের অন্ধকারে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এরা কারা? এরা আগুন সন্ত্রাস। এই আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। বাঁশের লাঠিতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে যারা রাস্তায় আসে তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
এ সময় তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, এ বাংলার মাটিতে আগুন নিয়ে খেলতে দেব না। লাঠি নিয়ে খেলতে দেব না। রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে আমরা মোকাবিলা করতে চাই। যদি খেলার নিয়ম ভঙ্গ করেন তাহলে খবর আছে।
নেতাকর্মীদের সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ, স্বাধীনতার আদর্শ ও আইনের শাসন গিলে খেয়েছে। আরেকবার ক্ষমতা পেলে বিএনপি বাংলাদেশকে গিলে খাবে।