ক্যানসার চিকিৎসায় সুখবর
মারণব্যাধি ক্যানসারে মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী বেড়ে চললেও, প্রতিবছরই সুস্থ হয়ে ফিরে আসার সংখ্যা বাড়ছে। ক্যানসারের চিকিৎসা নিয়ে নতুন এই সাফল্যের খবর দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা।
গবেষকরা জানান, তারা চিকিৎসার জন্য নতুন কিছু ধারণাও নিয়ে এসেছেন। ওয়েলকাম স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের একটি দল ৩০ ধরনের ক্যানসারের কোষগুলো ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দেওয়া হয় এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পুরো শরীরেই কমবেশি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তারা বলছেন, এখন থেকে ক্যানসারের চিকিৎসায় পুরো শরীরের জন্য ওষুধ না দিয়ে শুধু আক্রান্ত কোষগুলোর চিকিৎসা সম্ভব।
২০১৫ সালে ক্যানসারের ওষুধের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আসত বিদেশ থেকে। ৯ বছর পর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। এখন ১৪০টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই ক্যানসারের ওষুধ।
শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই ক্যানসারে আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হয়েছে।
২০১৮ সালে জিম অ্যালিসন মেডিসিনে নোবেল পেয়েছেন। তার উদ্ভাবিত নতুন প্রক্রিয়া ‘পেনিসিলিন মুহূর্ত’ নামে পরিচিত। এ প্রক্রিয়া ক্যানসারের চিকিৎসার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, এর মূল কথা হলো, আমাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো হবে, যাতে এটি শরীরের তৈরি হওয়া ক্যানসার কোষগুলোকে অগ্রাহ্য করবে আর একই সময়ে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলো সেসব কোষ ধ্বংস করতে থাকবে।
ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যানসারের ‘ভার্চ্যুয়াল টিউমার’ তৈরি করেছেন কেমব্রিজের বিজ্ঞানীরা, যা ক্যানসার রোগ শনাক্ত করার নতুন উপায় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। ফলে কোনো রোগীর শরীর থেকে টিউমারের নমুনা নিয়ে সেটিকে বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা যাবে এবং সব দিক থেকে দেখে প্রতিটা কোষ আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যাবে। গবেষকেরা বলছেন, এ প্রযুক্তি ক্যানসার রোগটিকে আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং ক্যানসার মোকাবিলায় নতুন চিকিৎসা বের করতে সহায়তা করবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ক্যানসারে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। যে বিষয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে, যেমন সিগারেট, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত ওজন ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে হবে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর একটি জীবনযাপন প্রক্রিয়া বেছে নিতে হবে ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে চাইলে। কারণ, গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীতে অন্তত ২০০ ধরনের ক্যানসার রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলোই রয়েছে, যেগুলোতে আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার হার অনেক বেশি। যেমন স্তন ক্যানসার ও প্রোস্টেট ক্যানসার।