ক্যানসারের উপাদান পাওয়ায় জনসন অ্যান্ড জনসনকে ৯৬৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

মার্কিন বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনকে ৯৬৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ক্যানসারে মারা যাওয়া এক নারীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণের এই অর্থ দিতে হবে। রায়ে বলা হয়েছে, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেডি পাউডার প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি ওই নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। মার্কিন বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে এখনও ৬৭ হাজারেরও বেশি মামলা রয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা মে মুর ২০২১ সালে ৮৮ বছর বয়সে বিরল ক্যানসার মেসোথেলিওমায় মারা যান। ওই বছরই তার পরিবার জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, এই কোম্পানির ট্যালকম বেবি পাউডারে অ্যাজবেস্টস ফাইবার নামে একটা উপাদান ছিল, যা মেসোথেলিওমা ক্যানসারের কারণ।
সোমবার (৭ অক্টেবার) রাতে আদালত এই মামলা রায় ঘোষণা করেন। তাতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে ৯৬৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এর মধ্যে ১৬ মিলিয়ন ডলার ভুক্তভোগীর ক্ষতিপূরণে এবং ৯৫০ মিলিয়ন ডলার শাস্তিস্বরূপ।
এই শান্তিমূলক ক্ষতিপূরণ আপিলে কমিয়ে আনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের মতে, দণ্ডমূলক ক্ষতিপূরণ (যা শাস্তি হিসেবে দেয়া হয়) সাধারণত ক্ষতিপূরণমূলক অর্থের ৯ গুণের চেয়ে বেশি হওয়া উচিত নয়।
রায় ঘোষণার পর ভুক্তভোগী মে মুরের পরিবারের পক্ষের একজন আইনজীবী ট্রে ব্রানহাম বলেন, তার দল আশাবাদী যে জনসন অ্যান্ড জনসন অবশেষে এই অর্থহীন মৃত্যুগুলোর জন্য দায় স্বীকার করবে।
আদালতের এই রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসনও। কোম্পানি আইন বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক হাস এই রায়কে ‘অত্যন্ত অন্যায্য ও অসাংবিধানিক’ অভিহিত করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোম্পানি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে ‘ভুয়া বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা’ উপস্থাপন করেছেন।
মেসোথেলিওমা রোগটি দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজবেস্টসের সংস্পর্শের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়। তবে জনসন অ্যান্ড জনসন বলেছে, ‘তাদের পণ্য নিরাপদ, এতে অ্যাজবেস্টস নেই, এবং এটি ক্যানসারের কারণ নয়।’ কোম্পানিটি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ট্যালকম পাউডার বিক্রি বন্ধ করে দেয় এবং এর পরিবর্তে ভুট্টার গুঁড়ো ভিত্তিক পণ্য চালু করে।
আদালতের নথি অনুযায়ী, জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে এখনও ৬৭ হাজারেরও বেশি মামলা রয়েছে। মামলাকারীদের দাবি, তারা বেবি পাউডার ও অন্যান্য ট্যালকম পণ্য ব্যবহার করার পর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মামলাগুলোর মধ্যে মেসোথেলিওমা সংক্রান্ত মামলার সংখ্যায় কম, আর অধিকাংশ মামলা হলো ডিম্বাশয়ের ক্যানসার সংক্রান্ত অভিযোগ।
You might also like

Comments are closed.