কোন সময় রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করবেন?

আপনি মাস ছয়েক অন্তর অন্তর প্যাথোলজি সেন্টারে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে আসেন। আর রক্তে শর্করার মাত্রায় যখন-তখন হেরফের আসতে পারে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শে ডিজিটাল যন্ত্রের সাহায্যে অনেকেই বাড়িতে নিজে নিজে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে থাকেন। এ ধরনের রক্তপরীক্ষা সাধারণত সকালে খালি পেটে করতে বলা হয়। তবে খাওয়ার পর ‘সুগার স্পাইক’ কতটা বাড়ল, তা বোঝার জন্য অনেকেই আবার সকালের খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পর এ টেস্ট করে থাকেন। আসলে এসব পদ্ধতি কি সঠিক? কোনটি পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য, তা জানা উচিত।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে রক্ত পরীক্ষা দুই রকম হয়। প্রথমটি হলো— নির্দিষ্ট সময় উপোস করে তারপর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। আর দ্বিতীয়টি হলো—পোস্ট-প্রান্ডিয়াল, যেটি খাবার খাওয়ার অন্ততপক্ষে ২ ঘণ্টা পর করা হয়।

রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করার আগে যে বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, তা হচ্ছে  ফাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে উপোসের সময়কাল যেন ৮ ঘণ্টা হয়। সেদিকে নজর রাখতে হবে। তাতে রিপোর্ট আরও নির্ভুল হবে। এ ক্ষেত্রে নির্জলা থাকতে পারলে ভালো। ঘুম থেকে ওঠার পর পরীক্ষা করতে খুব বেশি দেরি করা যাবে না। আবার ‘পিপি’-র ক্ষেত্রে ভরপেট খাবার খাওয়ার ঠিক দুই ঘণ্টা পরই রক্ত পরীক্ষা করে নিতে হবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে খালি পেটে রক্ত পরীক্ষা করা কেন জরুরি? কারণ খাবার খাওয়ার আগে শরীর নিজে থেকে কীভাবে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করছে, তা বোঝার জন্যই চিকিৎসকরা খালি পেটে রক্ত পরীক্ষা করাতে বলেন। ডায়াবেটিস এবং প্রিডায়াবেটিস রোগীর জন্য এ পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাস্টিংয়ে যদি শর্করার মাত্রা অনেকটা বেশি দেখায়, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে লিভার থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ ক্ষরিত হচ্ছে। কিংবা শরীরে উপস্থিত ইনসুলিন হরমোন ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না।

দীর্ঘদিন ধরে যারা ডায়াবেটিসের সঙ্গে ঘর করছেন, তাদের জন্য দুই রকম পরীক্ষাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ফাস্টিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময়টা অবশ্যই সকালে এবং খালি পেটে। মানে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই এ রক্তপরীক্ষা করে নিলে ভালো হয়। এমনকি ফাস্টিং চেক করার আগে পানি, চা খাওয়াও নিষেধ। কিন্তু যদি খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করাতে চান, সে ক্ষেত্রে ওই পরীক্ষা আর ফাস্টিং থাকে না, হয়ে যায় ‘পিপি’ বা পোস্ট-প্রান্ডিয়াল। খুব স্বাভাবিকভাবেই দুটি পরীক্ষা ভিন্ন দুটি ফল আসে। এবং ডায়াবেটিস রোগীর জন্য দুটিই সমান গুরুত্বপূর্ণ।

You might also like

Comments are closed.