কুড়িগ্রাম কৃবি: কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে হবে সহায়ক, রাখবে ভূমিকা
প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বর্ষে শিক্ষা কার্যক্রমে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি
নীরবতাকে কাছে পেয়ে স্থবিরতাকেই যেনো আপন করে নিয়েছে কুড়িগ্রামের তিস্তা, ধরলা আর দুধকুমার। তবুও এখানকার জীবন যেন উপভোগের নয়, কেবল যাপনের।
অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা অঞ্চলে এবার কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হচ্ছে। প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বর্ষে দু’টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে উত্তরের একমাত্র কৃষি বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের।
কুড়িগ্রামের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি নির্ভর হওয়ায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ও পাচ্ছে বাড়তি গুরুত্ব। প্রতিষ্ঠার তৃতীয় বর্ষে শিক্ষা কার্যক্রমে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ৩৩টি বিভাগ অনুমোদন থাকলেও প্রথম ব্যাচে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে দু’টি বিভাগে শুরু হচ্ছে পাঠদান।
এদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ২৫০ একর জমি নির্ধারণ করা থাকলেও এখনো শুরু হয়নি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। উত্তরের একমাত্র কৃষি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অঞ্চলের কৃষি গবেষণা, উৎপাদন ও বিপণনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে, আশা সংশ্লিষ্টদের।
অধ্যক্ষ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মির্জা মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর ইকোনমিক জোন এবং ভবিষ্যতে যদি ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর উপরে যদি ব্রিজ হয়, সবকিছু মিলে আমরা মনে করি আমাদের কুড়িগ্রামের কৃষির যে উৎপাদন সেটি সর্বক্ষেত্রে বৃদ্ধি পাবে।’
এরই মধ্যে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কৃষি ও মৎস্য অনুষদ বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করেছে কুড়ি কৃবি। কৃষি গুচ্ছের আওতায় প্রথম ব্যাচে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে ৮০ জন শিক্ষার্থী। প্রস্তুত করা হয়েছে ক্লাসরুম, ল্যাব আর আবাসনের ব্যবস্থা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ৩৩টি বিভাগের অনুমোদন থাকলেও সবগুলো বিভাগ চালু করতে দরকার স্থায়ী ক্যাম্পাস। এছাড়া স্বল্প জনবল আর অবকাঠামোগত অপ্রতুলতাও আছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ অঞ্চলের কৃষির সাথে যে বিষয়গুলো জড়িত রয়েছে সেগুলোর উন্নয়নের জন্য এবং বিশ্বমানের গবেষণা করে কীভাবে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কৃষির উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা রাখবে এটি আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
ড. রশিদুল ইসলাম আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ড. জাকির হোসেন একটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে করে গেছেন সমঝোতা চুক্তি। এর মাধ্যমে কুড়িকৃবির শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নসহ উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে প্রথম সারির আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর গবেষণার মূল ক্ষেত্র হিসেবে ধরা হচ্ছে জেলার ৪৫ হাজার চরকৃষি জমি ও ২৫ হাজার হেক্টর জলাশয়। তবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন তখনই সম্ভব হবে, যখন কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার নালিয়ার দোলায় নির্ধারিত এই ২৫০ একর জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস পাবে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।