কুয়েট থমথমে, রামদা হাতে ভাইরাল যুবদল নেতাকে বহিষ্কার

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ছাড়তে দেখা গেছে।

এদিকে মঙ্গলবারের (১৮ ফেব্রুয়ারি) সংঘর্ষের সময় রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে বহিষ্কার করেছে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। রামদা হাতে তার দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়ে।

বুধবার যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনা জেলা শাখার দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো অপরাধের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী দেবাঞ্জন রায়ের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। সকালে হল ছেড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বললেন, ‘পরিস্থিতি যা মনে হচ্ছে, তাতে একাডেমিক কার্যক্রম হয়তো আরও কিছুদিন বন্ধ থাকবে। নিরাপত্তার জন্য, পড়াশোনা সুবিধার জন্য হল ছাড়ছি।’

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় শতাধিক আহত হন।

মঙ্গলবার রাতে নাম প্রকাশ করতে না চাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রেস ব্রিফিং করে কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কুয়েটে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে তারা ঘোষণা দেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (নর্থ) মো. নাজমুল হাসান, সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও মামলা হয়নি। ক্যাম্পাসের গেটে পুলিশ মোতায়েন আছে। শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে। কোনো ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে তারা পুলিশকে আশ্বস্ত করেছেন। স্থানীয়দের সঙ্গেও পুলিশের একই রকমের কথা হয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.