কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম ওই কমিটি গঠন করেন।
ডিসি জানান, আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী ও উম্মে হাবিবা ফারজানা।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যু হয় লেখক মুশতাক আহমেদের। ‘রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগে গ্রেপ্তার মুশতাক গত বছরের মে মাস থেকে কারাবন্দি ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায়।
কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মুশতাক আহমেদ কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে যান। দ্রুত তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৮টা ২০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, কারাগার থেকে মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সঠিক কারণ জানা সম্ভব হবে।
গত ১১ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
২০২০ সালের মে মাসে রমনা থানায় মুশতাকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জাতির পিতা, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মহামারি করোনাভাইরাস সম্পর্কে গুজব, রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তারা রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপরাধ করেছেন।
গত সেপ্টেম্বরে এই মামলায় গ্রেপ্তার মিনহাজ মান্নান ও দিদারুল ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পান। তবে কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের জামিন হয়নি। ছয়বার মুশতাকের জামিন আবেদন নাকচ হয় আদালতে।