কানাডায় ১০ লাখ মানুষের চাকরি
কানাডায় ১০ লাখের বেশি চাকরির সুযোগ রয়েছে। গত বছরের মে মাসের পর শূন্য পদের সংখ্যা তিন লাখের বেশি বেড়েছে। রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা জানতে একটি জরিপ চালায় কানাডা সরকার। এতে দেশটির বিভিন্ন শিল্প খাতে শ্রমিকসংকটের তথ্য উঠে আসে। কানাডার কর্মক্ষম ব্যক্তিদের বয়স বেড়ে যাওয়া ও অবসরে চলে যাওয়ায় শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। এ জন্য দেশটিতে অভিবাসীদের চাহিদা বেড়ে গেছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।
কানাডার সংবাদমাধ্যম সিআইসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডা সরকার চলতি বছরে এযাবৎকালের সর্বোচ্চসংখ্যক ৪ লাখ ৩০ হাজার মানুষকে স্থায়ী নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৪ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে সাড়ে ৪ লাখে।
এ অবস্থায় দেশটিতে বেকারত্বের হার তলানিতে নেমে গেছে। অপর দিকে বহু নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে খালি পদে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়েছে অভিবাসীদের জন্য। আরেকটি জরিপে দেখা গেছে, কানাডার নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পদ খালি রয়েছে।
আলবার্টা ও অন্টারিও প্রদেশে গত বছর প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে বেকার মানুষের সংখ্যা ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। তা কমে মার্চ মাসে নেমে আসে ১ দশমিক ২ শতাংশে। আরও কমে এপ্রিল মাসে হয় ১ দশমিক ১ শতাংশ।
বিভিন্ন পেশাজীবী, বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড ও কারিগরি সেবা, পরিবহন ও গুদামজাতকরণ, ফিন্যান্স ও ইনস্যুরেন্স, বিনোদন ও আবাসন খাত—সব কটিতেই রেকর্ডসংখ্যক মানুষের চাকরির সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া আবাসন নির্মাণ খাতেও গত এপ্রিলে শ্রমিকের চাহিদা যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি হয়। তখন এই খাতে ৮৯ হাজার ৯০০ মানুষের চাহিদা ছিল। এই সংখ্যা গত বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ বেশি।
আরেকটি জরিপের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে নোভা স্কটিয়া ও মানিটোবায় বাসাবাড়ি ও ফুড সার্ভিস খাতে ১ লাখ ৬১ হাজার করে শ্রমিকের চাহিদা ছিল।
এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, কানাডার অল্পসংখ্যক মানুষ কর্মক্ষেত্রে ঢুকতে চাইছেন। আর ৫৫ বছরের বেশি বয়সীরা অবসরে যাচ্ছেন। এসব কারণে এ বছর কানাডার শ্রমবাজারে অস্বাভাবিক শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী বছরগুলোতে জন্ম নেওয়া প্রায় ৯০ লাখ কানাডিয়ান এই দশকেই অবসরে যাচ্ছেন। এ কারণে চাকরির ক্ষেত্রে আরও বড় সংখ্যায় পদ খালি হচ্ছে।
সম্প্রতি আরবিসির করা এক জরিপে দেখা গেছে, এক–তৃতীয়াংশ কানাডিয়ান আগেভাগেই অবসরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রতি ১০ জনের ৩ জন অবসরের কাছাকাছি চলে এসেছেন। করোনা মহামারির কারণে তাঁদের অবসরে যেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। অপর দিকে ২০২০ সালে কানাডায় সবচেয়ে কম জন্মহার ছিল।