‘কলিজার টুকরারে শেষ বিদায়ও দিতে পারলাম না’

‘কলিজার টুকরারে শেষ বিদায় দিতে পারলাম না। দাফন করার সময় তারে একবার দেখতেও পারলাম না, কোলেও নিতে পারলাম না, আল্লাহ! এমন দিন যেন কোনো বাবার ভাগ্যে না আসে।’

এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন ভূমিকম্পে রূপগঞ্জে দেয়াল ধসে নিহত ফাতেমার বাবা সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল হক।

জানা যায়, আব্দুল হক চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। দুই মেয়ে নিয়ে রূপগঞ্জের ইসলামবাগের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন কুলসুম। পাশের বাসায় ভাড়া থাকেন কুলসুমের মা-বাবা।

 

গতকাল সকালে তিনি ফাতেমাকে কোলে নিয়ে বাবার বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় ভূমিকম্প টের পেয়ে রাস্তার ধারে একটি সীমানাপ্রাচীরের পাশে আশ্রয় নেন। প্রতিবেশী জেসমিনও সেখানে আশ্রয় নেন। কিন্তু ভূমিকম্পের কারণে মুহূর্তেই ধসে পড়ে সেই প্রাচীর। এতে চাপা পড়েন তারা। ঘটনা দেখে দৌড়ে সেখানে যান প্রতিবেশী ইমতিয়াজ ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, ‘ইট সরাইতে সরাইতে ফাতেমারে বাহির করলাম, কিন্তু বাঁচানো গেল না।’

এ ঘটনার পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন আব্দুল হক। এ কারণে মেয়ের দাফনের সময়ও থাকতে পারেননি। বিকেলে বাড়ির পাশে ফাতেমার জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম জানান, ধসে পড়া প্রাচীরটি অন্তত ১০ ফুট উঁচু ছিল। কিন্তু কোনো রডের কাজ সেখানে নেই। এমনকি উঁচু দেয়ালের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কোনো পিলারও ছিল না।

এ ধরনের অস্বাভাবিক রকম উঁচু দেয়াল বা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়া হবে। নিহতের পরিবারকে দাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

You might also like

Comments are closed.