করোনায় ২০ শে জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মারা যেতে পারে ৭০০০০ মানুষ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনায় মারা যেতে পারেন ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ মানুষ। এ সময়ে নতুন আক্রান্ত হতে পারেন কমপক্ষে ৮০ লাখ মানুষ। অর্থাৎ এ সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে শতকরা ৮০ ভাগ এবং মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে শতকরা ২৯ ভাগ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, আগামী ২০ শে জানুয়ারি শপথ নেয়ার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের। ফলে তার হাতে এখনও দুই মাস সময় হাতে। এ সময়ে তিনি তার ক্ষমতা গ্রহণের পর করোনা ভাইরাস মহামারিকে নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকারে রেখেছেন। একই সঙ্গে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছেন।

ব্যবসা এবং শ্রমজীবীদের টিকে থাকার জন্য অধিক আর্থিক প্রণোদনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। এই দুই মাসে করোনা ভাইরাসের বিস্তারকে পরিবর্তন করতে হলে বিদায়ী ট্রাম্প প্রশাসনকে তার কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। না হলে রাজ্য সরকারগুলোকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে আরো সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। সামনেই শীতের মৌসুম। এ সময়ে এই চ্যালেঞ্জের সঙ্গে আরো সমস্যা যোগ হবে। ইয়েল ইউনিভার্সিটির মহামারি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর গ্রেগ কনসালভেস বলেন, বসন্তে করোনা ভাইরাস মহামারি যে রূপ ধারণ করেছিল, সামনেই তা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে। প্রতিদিন মার্কিনিরা যেভাবে ভুগেছেন তার চেয়েও খারাপ সময় সামনে।
রয়টার্স লিখেছে, সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণা এবং পরে ৩রা নভেম্বরের নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এ সময়ে তিনি হোয়াইট হাউসের করোনা ভাইরাস টাস্কফোর্সের সঙ্গে তেমন যুক্ত ছিলেন না। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ গ্রেগ ডাকো বলেছেন, বহু আঞ্চলিক টাস্কফোর্সের কাছে ট্রাম্পের করোনা ভাইরাস বিষয়ক টাস্কফোর্স তেমন কিছুই না। কিছ্ইু না’র চেয়ে এটা ছিল ন্যূনতম সমাধান। এরই মধ্যে এই ভাইরাসের বিস্তারকে মন্থর করতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু শহর ও রাজ্য নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টাস্কফোর্স এখনও শুধু জীবন রক্ষার দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। তারা বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউসে নির্বাচনের আগে এক রাতে পার্টি দেয়া হয়। সেই পার্টিতে উপস্থিত অতিথিদের বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক ছিল না। এর মধ্যে ছিলেন ট্রাম্পের শীর্ষ স্থানীয় মিত্ররা। এর মধ্যে আছেন চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডো। পরে তার করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরো অনেক বেশি কিছু করা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এখানে প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আক্রমণ করেছিল বড় বড় উপকূলীয় শহর, নার্সিং হেম এবং গ্রামীণ এলাকায়। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে এক কোটি মানুষ। কিন্তু রয়টার্সের হিসাব বলছে, এখন থেকে নতুন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা নেয়ার আগে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৮০ লাখ থেকে এক কোটি ৩০ লাখ। বর্তমানে প্রতিদিন যে হারে মানুষ মারা যাচ্ছেন, তাতে এখন থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার সময়ের মধ্যে মারা যেতে পারেন ৭০ হাজার থেকে দেড় লাখ মানুষ। বুধবার নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে দুই লাখ ৪৩ হাজার মানুষ। ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস এন্ড ইভ্যালুয়েশন একই রকম হিসাব করেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০ শে জানুয়ারি নাগাদ মৃতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে কমপক্ষে ৩ লাখ ৬০ হাজার।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.