করোনায় দেশে আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মৃত্যু
দেশে নভেল করোনাভাইরাসে (কভিড-১৯) এক দিনে আরো ১৩ জন মারা গেছে, যা গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের ১২ মে এর চেয়ে কম মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়েছিল। ওই দিন ১১ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অবশ্য ৭ ও ১২ নভেম্বরও করোনায় ১৩ জন করে মারা গিয়েছিল।
শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১৩ জনের মৃত্যুসহ দেশে মোট মারা গেছে সাত হাজার ৮৬২ জন। আর নতুন শনাক্ত ৭৬২ জনসহ দেশে মোট নিশ্চিত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৫।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত আরো ৭১৮ জন সুস্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত সুস্থ হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৭১ হাজার ১২৩।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১১৫টি আরটি-পিসিআর, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে অর্থাৎ ১৯৯টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৭৮টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মোট ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৯২টি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫.৫৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় মোট শনাক্তের হার ১৫.৩৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯.৪৮ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৪৯ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৩ জনের মধ্যে আটজন পুরুষ এবং নারী পাঁচজন। মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে আটজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছে ৯৬ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ১০১ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছে ৯৭ হাজার ৯৯০ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ৮৬ হাজার ৮০২ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছে ১১ হাজার ১৮৮ জন।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর দেয় সরকার। গত ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এদিকে বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৯ কোটি ৩৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গত শনিবার আক্রান্ত হয় সাত লাখ ৫৯ হাজার ৬৮৮ জন। মৃতের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। এর মধ্যে শনিবার মৃত্যু হয় ১৫ হাজার ৫১২ জনের। সেরে ওঠার সংখ্যাও কম নয়; ছয় কোটি ৭০ লাখের বেশি। চিকিৎসাধীন আছে প্রায় দুই কোটি ৪৬ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ রয়েছে দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষের (৯৯.৫ শতাংশ)। বাকিদের (০.৫ শতাংশ) অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিশ্বে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১২ হাজার ১৩ জন। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ৩ শতাংশ। সূত্র : দ্য প্রিন্ট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ব্লুমবার্গ।