করোনাভাইরাস: টিকা আবিষ্কারকদের দলে দুই বাঙালি নারী!

করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে গোটা বিশ্বে চলছে ব্যাপক তৎপরতা। বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে এই ভাইরাস। অনেক গবেষকই জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে তাদের অগ্রগতি কথা। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। এখানকার জেনার ইনস্টিটিউটের যে দলটি করোনার টিকা আবিষ্কারে অনেকটা এগিয়ে গেছেন সেই দলে আছেন সুমি বিশ্বাস ও চন্দ্রা দত্ত নামে দুই ভারতীয় বাঙালি নারী গবেষকও। খবর আনন্দবাজার, নিউজ এইট্টিনের

সারা গিলবার্টের নেতৃত্বে অক্সফোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন বিজ্ঞানীর যে দলটি কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছেন সেখানকার গবেষক হয়ে কাজ করছেন সুমি বিশ্বাস ও চন্দ্রা দত্ত। এছাড়া এই দলে আছেন আড্রিয়ান হিল এবং টেরেসা ল্যাম্বের মতো বিজ্ঞানীও।

২০০৫ সালে বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে পড়ার পরে ব্রিটেনে যান সুমি। তারপর একের পর এক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়েছেন। প্রথমে ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিন’-এ যোগ দেন তিনি। সেখানে ১১ মাস কাজ করার পরে ২০০৬ সালে ক্লিনিক্যাল মেডিসিনে ডি-ফিল করতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ২০১৩ সালে জেনার ইনস্টিটিউটে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করেন এই বাঙালি ইমিউনোলজিস্ট। তিন বছরের মাথায় এই প্রতিষ্ঠানেরই অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হন তিনি।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের অধীনে ‘স্পাইবায়োটেক’ নামে যে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেটার সহকারী কর্ণধার ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারও হন সুমি। বাঙালি এই গবেষক মূলত ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক নিয়ে জেনার ইনস্টিটিউটে যে গবেষণা চলছে, সেই দলের নেতৃত্বেও রয়েছেন সুমি। তাদের তৈরি প্রতিষেধক বর্তমানে মানবদেহে ট্রায়াল চালানোর প্রথম পর্যায়ে রয়েছে।

এদিকে কলকাতার মেয়ে ৩৪ বছর বয়সী চন্দ্রা দত্ত গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল থেকে পাস করে হেরিটেজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিরিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজিতে বিষয়ে বায়োটেক ডিগ্রি নেন। এরপর ২০০৯ সালে তিনি লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োসায়েন্স (বায়োটেকনোলিজি) বিষয়ে এমএসসি করার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। গত বছর অক্সফোর্ডের সিনিকাল বায়ো-ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে যোগ দেয়ার আগে তিনি বিভিন্ন ভূমিকায় কাজ করেছেন।

এ বছরের জানুয়ারিতে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে কাজ শুরু করে সারার দল। গত সপ্তাহে প্রতিষেধকটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই ট্রায়াল ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এই প্রচেষ্টায় আশি শতাংশ সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল সারার দল। গোটা বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে এই দলের সফলতার দিকে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.