একই ব্যক্তি দুবার ট্রাম্পের টুইটার একাউন্ট হ্যাক করেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার একাউন্টের পাসওয়ার্ড অনুমান করে সফলভাবে একাউন্টটি হ্যাক করেছিলেন নেদারল্যান্ডসের এক নাগরিক। সেবার ওই পাসওয়ার্ড ছিল এমএজিএ ২০২০ (মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন-এর সংক্ষিপ্তরূপ)। এর আগে এ বছরের শুরুর দিকেও একই হ্যাকার ট্রাম্পের টুইটার একাউন্টের পাসওয়ার্ড সঠিকভাবে অনুমান করতে পেরেছিলেন। তিনি ও অন্যান্য সাইবার-নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষকরা ২০১৬ সালে ‘ইউ আর ফায়ার্ড’ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ট্রাম্পের একাউন্টে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশের আগে রিয়েলিটি শো’র উপস্থাপক ছিলেন ট্রাম্প। অ্যাপ্রেন্টিস নামে ওই শোতে প্রতিযোগীদের ‘ইউ আর ফায়ার্ড’ বলে বাদ দিতেন তিনি।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়, হ্যাকের বিষয়টি নিশ্চিত হলেও ওই ব্যক্তিকে শাস্তি দেবেন না সরকারি কৌঁসুলিরা। তাদের ভাষ্য, ওই হ্যাকার ‘নৈতিকতার’ মানদণ্ড লঙ্ঘন করেননি।
খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের একাউন্ট হ্যাককারীর নাম ভিক্টর গেভারস। তিনি নেদারল্যান্ডসের একজন সুপরিচিত সাইবার-নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক।
গেভারস জানান, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগ দিয়ে, ২২শে অক্টোবর ট্রাম্পের একাউন্টে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। একাউন্টের ভেতরকার স্ক্রিনশটও তিনি তখন শেয়ার করেছিলেন।
কিন্তু সে সময় হোয়াইট হাউজ এই হ্যাকের কথা অস্বীকার করে। এমনকি টুইটারও জানায়, তাদের কাছে এমন হ্যাকের কোনো প্রমাণ ছিল না।
তবে ডাচ প্রসিকিউটররা জানান, সম্প্রতি হ্যাকটির পক্ষে প্রমাণ তারা পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও টুইটার জানায়, আমরা এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাইনি। এমনকি নেদারল্যান্ডসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পক্ষেও কোনো প্রমাণ পাইনি। মার্কিন সরকারের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় শাখাসহ দেশটির নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উচ্চ-পর্যায়ের একাউন্টগুলো সুরক্ষা করতে আমরা নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের কাছে জানতে চাইলে কোনো সাড়া পায়নি বিবিসি। তবে গেভারস জানিয়েছেন, পুরো ঘটনার পরিণতি নিয়ে তিনি বেশ খুশি। গেভারস বলেন, এটা কেবল আমার কাজের ব্যাপার না। ইন্টারনেটে দুর্বল জায়গা খুঁজে বের করা নিয়ে কাজ করা সকল স্বেচ্ছাসেবীর জন্যই সুখবর।
তিনি বলেন, ১৬ই অক্টোবর মার্কিন নির্বাচনের হাই-প্রোফাইল প্রার্থীদের একাউন্টগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় নিয়মিত হারে কাজ করা শুরু করেন তিনি। সেসময়ই প্রেসিডেন্টের একাউন্টের পাসওয়ার্ড অনুমান করতে পারেন।
ডাচ পুলিশ জানিয়েছে, হ্যাকার নিজ থেকেই একাউন্টটি থেকে বেরিয়ে যান। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, তিনি পাসওয়ার্ডটির সক্ষমতা যাচাই করছিলেন। কারণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ দিয়ে তিনি চাইলে একাউন্টটি হ্যাক করতে পারতেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, তার হ্যাকের পেছনে অন্য কোনো স্বার্থ লুকায়িত ছিল না। ডাচ পুলিশ জানিয়েছে, তারা মার্কিন কর্তৃপক্ষকে তাদের প্রাপ্ত তথ্যগুলো পাঠিয়েছে।
গেভারস পুলিশকর্মীদের জানান, তার কাছে হ্যাকটির আরো প্রমাণ রয়েছে। প্রসঙ্গত, চাইলে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ছবি, মেসেজ, বুকমার্ক করে রাখা টুইট, ব্লক করে রাখা ব্যক্তিদের তালিকাসহ ওই একাউন্টের সকল তথ্যই দেখতে পারতেন গেভারস।
৮ কোটি ৯০ লাখ অনুসারীসম্পন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্টের একাউন্টটি এখন সুরক্ষিত আছে। তবে তাতে নতুন কী সুরক্ষা যুক্ত করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে টুইটার।