এইচএসসির ফলে রাজধানীর সেরা ১০ কলেজ
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে ৯টি সাধারণ ও মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে এবার গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। তবে এবার মাদ্রাসা বোর্ডে পাশের হার সর্বোচ্চ। এবারের পাশের হার ৭৫ দশমিক ৬১।
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পর বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবারও ভালো রেজাল্ট করেছে রাজধানীর নটর ডেম কলেজ। তিন বিভাগে মিলিয়ে মোট ৩ হাজার ২৫১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ৩ হাজার ২২৬ জন উত্তীর্ণ এবং ২৫ জন অনুত্তীর্ণ। কলেজটির পাসের হার প্রায় ৯৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ৭৪১ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ, ২ জন অনুত্তীর্ণ, ৩৭৮ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন। মানবিক বিভাগের ৩৯৫ জনের মধ্যে ৩৮৫ জন উত্তীর্ণ, ১০ জন অনুত্তীর্ণ এবং ১০৮ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন। বিজ্ঞান বিভাগের ২ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার ১০০ জন উত্তীর্ণ এবং ১৩ জন অনুত্তীর্ণ। এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক ১ হাজার ৯৬৮ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন। সব মিলিয়ে কলেজের তিন বিভাগের মোট জিপিএ–৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৪ জন।
আদমজি ক্যান্টনমেন্ট কলেজে মোট ২ হাজার ৩৬৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৩১৫ জন উত্তীর্ণ এবং ৫২ জন অনুত্তীর্ণ। পাশের হার ৯৭ দশমিক ৮ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে সর্বোচ্চ জিপিএ–৫ পেয়েছেন ১ হাজার ২২৯ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ৫৩৮ জন পুরুষ এবং ৬৯১ জন নারী।
ঢাকা কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল মোট ১ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে ১ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। পাশ করেছেন ১ হাজার ১২৭ জন। পাশের হার ৯৯ দশমিক ১২ শতাংশ। এদের মধ্যে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৮৫৭ জন শিক্ষার্থী। ফল বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীই ছিলেন পুরুষ। মোট ১ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ১২৭ জন ন্যূনতম জিপিএ ১ হাজার শূন্য পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। উত্তীর্ণদের মধ্যে ৮৫৭ জন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ জিপিএ–৫ পেয়েছে।
ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ১৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ হাজার ১৪ জন এবং অনুত্তীর্ণ ২ জন। পাশের হার দাঁড়িয়েছে ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে সর্বোচ্চ জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৮৫১ জন শিক্ষার্থী।
রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে- মোট ১ হাজার ৬৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। উত্তীর্ণ হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ জন এবং অনুত্তীর্ণ একজন। পাশের হার ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে ১ হাজার ২১৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ অর্জন করেছে, যার মধ্যে ৫৭৪ জন পুরুষ ও ৬৪৪ জন নারী।
হলি ক্রস কলেজে-মোট ১ হাজার ৩০৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ১,৩০৪ জন উত্তীর্ণ এবং ৩ জন অনুত্তীর্ণ। পাসের হার ৯৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সর্বোচ্চ গ্রেড জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন ৯৬০ জন শিক্ষার্থী। বিভাগভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৭৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ, এর মধ্যে ১৭৬ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন। মানবিক বিভাগের ২৬১ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ, একজন অনুত্তীর্ণ এবং ১৫০ জন জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন। বিজ্ঞান বিভাগের ৭৬৮ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ, ৪ জন অনুত্তীর্ণ, এবং ৬৩৪ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন।
ঢাকা সিটি কলেজে- মোট ৩ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। আর পরীক্ষায় ৩ হাজার ৪৪১ জন অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৬৯ জন। অনুত্তীর্ণ ৭২ জন। পাশের হার ৯৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। উত্তীর্ণদের মধ্যে ৭৫২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন।
সরকারি বিজ্ঞান কলেজে- ১ হাজার ৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৯৮ জন অংশগ্রহণ করেছেন। ৯৮৭ জন উত্তীর্ণ এবং ১১ জন অনুত্তীর্ণ। উত্তীর্ণদের মধ্যে ৬৮৭ জন জিপিএ–৫ পেয়েছেন। পাশেল হার ৯৮ দশমিক ৯০ শতাংশ।
বিএ এফ শাহীন কলেজ- ঢাকাতে ২ হাজার ২১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। ১ হাজার ৯৯৫ জন উত্তীর্ণ এবং অনুত্তীর্ণ ২৬ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ১ হাজার ২ জন জিপিএ–৫ অর্জন করেছেন। অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ হাজার ৩৮৫ জন পুরুষ ও ৬৩৬ জন নারী, উত্তীর্ণদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬৮ জন পুরুষ এবং ৬২৭ জন নারী। জিপিএ–৫ প্রাপ্তির মধ্যে ৬৯৬ জন পুরুষ এবং ৩০৬ জন নারী।
বীর শহীদ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ- ঢাকাতে মোট ১ হাজার ৮২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। ১ হাজার ৮২৪ জন অংশগ্রহণ করেন, ১ হাজার ৮০২ জন উত্তীর্ণ এবং পাশেল হার ৯৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৫২৪ জন শিক্ষার্থী। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ হাজার ১১ জন পুরুষ ও ৮১৩ জন নারী, উত্তীর্ণদের মধ্যে ৯৯৬ জন পুরুষ ও ৮০৬ জন নারী, জিপিএ–৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ৩০০ জন পুরুষ এবং ২২৪ জন নারী।
গত ২৬ জুন শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৭২ হাজার ৮৮৩ জন কম। এসব পরীক্ষার্থী দেশের ৪ হাজার ৮০৮টি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ১ হাজার ৬০৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ১০২ জন, যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার ৯৭৪ জন কম। ২ হাজার ৬৮২টি মাদ্রাসার এসব শিক্ষার্থী ৪৫৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজার ৬১১ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৭ হাজার ২৫ জন কম। ১ হাজার ৮২৪টি প্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ৭৩৩টি কেন্দ্রে অংশ নেয়।

Comments are closed.