ই-গেটে ১৮ সেকেন্ডে ইমিগ্রেশন, যাত্রীরা খুশি

ঢাকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান। ব্যাংকক যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আসেন। বিমানবন্দরে স্থাপিত ই-গেটের প্রবেশ পথে প্রথমে পাসপোর্ট ছবি সম্বলিত স্মার্ট কার্ডের পৃষ্ঠাটি স্ক্যান করান তিনি। ৪/৫ সেকেন্ডের মধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তার সব তথ্য মিলে যায়। এরপর সামনে থাকা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে পাসপোর্টের ছবির সঙ্গে তার মুখমণ্ডল মিলে যায়। এতে খুলে যায় দ্বিতীয় গেটও। মাত্র ১৮ সেকেন্ডের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয় তার।

এরপর পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ইমিগ্রেশন কার্যক্রমও অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করে ফ্লাইটে উঠেন তিনি। ই-গেটের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে ইমিগ্রেশন শেষ করতে পেরে আনন্দিত এই যাত্রী।

তিনি বলেন, আগে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে ন্যূনতম আধঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হতো। অনেক সময় ১ ঘণ্টাও লাগতো। এখন অল্প সময়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়।

বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত ই-গেট ব্যবস্থা সরেজমিনে গিয়ে এমনটি দেখা যায়। দেখা যায়, বহির্গমন ও আগমনী যাত্রীদের মধ্যে যাদের ই-পাসপোর্ট রয়েছে, তারা বিমানবন্দরে স্থাপিত ই-গেট ব্যবহার করছেন। এতে মাত্র ১৮ সেকেন্ডের মধ্যে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারছেন তারা। যা আগে ৩০ মিনিট কিংবা এরও অধিক সময় লেগে যেত।

ধানমন্ডির বাসিন্দা নূরী আক্তার ব্যাংকক যেতে বিমানবন্দর আসেন। অল্প সময়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগে এক বস্তা কাগজ নিয়ে ইমিগ্রেশন চেকিংয়ের জন্য অপেক্ষা করা লাগত। কখনো কখনো ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় লেগে যেত। খুব বিরক্ত লাগত। কিন্তু ই-পাসপোর্ট নিয়ে ই-গেটের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করায় এখন মাত্র ১৮ সেকেন্ড লেগেছে। এতে যাত্রীদের জন্য ভোগান্তি কমেছে।

অস্ট্রেলিয়াগামী যাত্রী তানজিলা আক্তার বলেন, ই-গেট স্থাপনের পর তিনি এই প্রথম বিদেশ যাচ্ছেন। তাকে লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। বাংলাদেশও বিদেশের মতো এগিয়ে যাচ্ছে। তাই ভালোই লেগেছে। সিঙ্গাপুরগামী যাত্রী ক্যাপ্টেন রাশিদুল ইসলাম, ব্যাংককগামী যাত্রী সুফিয়া বেগম, সৌদি আরবগামী যাত্রী সাইফুল ইসলাম, থাইল্যান্ডগামী যাত্রী পারভেজসহ অন্তত শতাধিক যাত্রী ই-গেট দিয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পর বলেছেন, ভোগান্তি কমে গেছে।

এ সংক্রান্ত হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনালে স্থাপিত ই-গেটের সামনে বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ই-পাসপোর্টের প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল হাসান, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের কর্নেল খালিদ সাইফুল্লাহ, উইং কমান্ডার আক্তারুজ্জামান, লে. কর্নেল শরীফুল ইসলাম, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন প্রশাসন) মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.