ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক চান সৌদির এমবিএস!
প্রতিবেশী দেশ ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)। সম্প্রতি আল আরাবিয়া টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সৌদি আরব ইরানের সহযোগিতা চায়।
বিবিসির প্রতিদেন অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে সম্প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে যুবরাজ ইরানের ইরানের ‘পারমাণবিক কর্মকাণ্ড, মিসাইল পরীক্ষা করা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত অস্ত্রধারীদের সহায়তা করা’ এর কথা উল্লেখ করে ‘ইরানের নেতিবাচক আচরণ’ নিয়ে সৌদি আরবের ‘সমস্যা’ আছে বলে জানান।
তিনি বলেন, সৌদি আরব তাদের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক মিত্রদের সাথে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছে।
কয়েক দিন আগে দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক স্থাপন ও উত্তেজনা নিরসনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে সৌদি আরব ও ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইরাকের বাগদাদে গোপন বৈঠক করেছেন বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়।
যদিও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ ধরণের খবর অস্বীকার করা হয়েছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে এ খবরের সত্যতা স্বীকার কিংবা বাতিল করা হয়নি। ইরান বলেছে, তারা যে কোন ধরণের সংলাপ স্বাগত জানায়।
সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নেতা সৌদি আরব এবং শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইরানের মধ্যে আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য কয়েক দশক ধরে উত্তেজনা চলছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে পরষ্পরের বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধের ফলে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বেড়েছে।
বিশেষ করে, ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জোট ইয়েমেনে সরকার-সমর্থিত বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৫ সাল থেকে ইরান সমর্থন দিচ্ছে হুতি বিদ্রোহীদের। তবে বিদ্রোহীদের কোন ধরণের অস্ত্র দেবার কথা অস্বীকার করে ইরান।
এছাড়া লেবানন এবং ইরাকে হস্তক্ষেপ করার জন্য ইরানকে দায়ী করে সৌদি আরব।
তবে মঙ্গলবার রাতে প্রচারিত হওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের ব্যাপারে নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ। তিনি বলেন, তার দেশ চায় না যে ইরানের সাথে সম্পর্ক জটিল হয়ে যাক।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, সবকিছুর পরেও ইরান আমাদের প্রতিবেশী এবং আমরা তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক চাই।
এর আগে ২০১৮ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনিকে হিটলারের সাথে তুলনা করেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইয়ামেনের যুদ্ধ সম্পর্কে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোন দেশ চাইবে না যে তার সীমান্তে অস্ত্রধারী মিলিশিয়ারা থাকুক।
ওই সাক্ষাৎকারে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের আলোচনা টেবিলে বসে সংকট সমাধানের আহ্বান জানান সৌদি যুবরাজ।