ইকবালসহ চারজন জিজ্ঞাসাবাদ, দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
দুর্গাপূজা চলাকালে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে ইসকন মন্দিরে হামলা ও লাশ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় আরো দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চৌমুহনীতে সহিংসতার বিভিন্ন মামলায় এ নিয়ে আটজন অভিযোগ স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেন।
এদিকে কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে ফেনীতে গত ১৬ অক্টোবর সহিংসতায় আহত সোনাগাজী উপজেলার ভোয়াগ গ্রামের মো. কাউছার (১৯) গতকাল শুক্রবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি ওই গ্রামের পান ব্যবসায়ী সবুজ মিয়ার ছেলে।
ফেনীতে মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করে গত বৃহস্পতিবার ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন পৌর শহরের মধ্যম রামপুর এলাকার আহনাফ তাহছিন লাবিব (২২)। এর আগে আরো দুজন এই ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
কুমিল্লা মহানগরীর নানুয়ার দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনসহ চারজনকে আরো পাঁচ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার জানান, বেগমগঞ্জ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গতকাল মো. আরিফ (২১) ও মো. আব্দুল রহিম (৪০) ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম নবনীতা গুহ। এই দুজনকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলার পুলিশ প্রধান জানান, আরিফ ও রহিম ইসকন মন্দিরসহ কয়েকটি মন্দির ভাঙচুর ও ইসকন মন্দিরে একজনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ স্বীকার করেছেন। ওই দুজন হামলায় জড়িত আরো ২৭ জনের নাম বলেছেন।
জবানবন্দি দেওয়ার পর তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
গত ১৫ অক্টোবর এ ঘটনার পরদিন ইসকন মন্দিরের পাশের পুকুরে একজনের লাশ ভেসে ওঠে।
এর আগে স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফয়সাল ইনাম কমলসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর পাড়ে অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে চার আসামিকে গতকাল আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তাদের আবারও সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করে। শুনানি শেষে জেলার ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক বেগম ফারহানা সুলতানা পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ইকবাল ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন ইকরাম হোসেন, হুমায়ুন কবির ও ফয়সাল আহমেদ।
কুমিল্লা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইকবালসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। তাঁদের আরো জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।’
পুলিশ জানায়, কোরআন অবমাননা, পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলা হয়েছে।