ইউক্রেনে জাহাজ ঢুকলেই হামলা করবে রাশিয়া!

ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগর সংলগ্ন বন্দরগুলোতে চলাফেরা করা সব জাহাজ ‘সামরিক লক্ষ্যবস্তু’ হিসাবে বিবেচিত হবে বলে সতর্ক করেছে রাশিয়া। গত ১৭ জুলাই দুই দেশের শস্যচুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ইউক্রেন অস্থায়ী শিপিং রুট স্থাপন করে শস্য রপ্তানির ঘোষণা দেয়। এমন প্রেক্ষিতে জাহাজে হামলার ঘোষণা দিল রাশিয়া।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা ইউক্রেনে যাওয়া সব জাহাজকে কিয়েভের পক্ষে সামরিক মালামাল বহনকারী বলে মনে করবে। জাহাজের পতাকাযুক্ত দেশগুলো ‘ইউক্রেন সংঘাতের পক্ষ’ হিসাবে বিবেচিত হবে।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে দেওয়া বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ জুলাই) মধ্যরাত থেকে কৃষ্ণ সাগরে জাহাজের প্রতি তাদের নতুন অবস্থান বাস্তবায়ন করা হবে।

ইউক্রেনে যাওয়া জাহাজের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

কৃষ্ণ সাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমার দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে নৌ-চলাচলের জন্য সাময়িকভাবে অনিরাপদও ঘোষণা করেছে রাশিয়া।

এদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা কৃষ্ণ সাগরের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রোমানিয়া হয়ে একটি অস্থায়ী শিপিং রুট স্থাপন করছে।

ইউক্রেনের কমিউনিটি, অঞ্চল ও অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ভাসিল শকুরাকভ জাতিসংঘের শিপিং এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ার এমন পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে কৃষ্ণ সাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল বন্ধ করা।’

অপরদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাডাম হজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইউক্রেনের বন্দরের দিকে অতিরিক্ত সামুদ্রিক মাইন স্থাপন করেছে রাশিয়া। আমরা বিশ্বাস করি কৃষ্ণ সাগরে বেসামরিক জাহাজের বিরুদ্ধে যে কোনো আক্রমণকে ন্যায়সঙ্গত করার জন্য এটি একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা।’

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, রাশিয়া খাদ্যকে ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। মস্কো পরপর দুই দিন আন্তর্জাতিক জলসীমার জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি দিয়েছে এবং পরপর দুই রাত ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসায় হামলা চালিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর রুশ আগ্রাসনের শুরুতে ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরের বন্দরগুলো যুদ্ধজাহাজ দিয়ে অবরুদ্ধ করা ছিল। এ অবস্থায় ইউক্রেন থেকে খাদ্য ও সার রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। পরে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের শস্য চুক্তি হয়। এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনের বন্দরগুলো পুনরায় চালু হয় এবং বিশ্ববাজারে দেশটি শস্য রপ্তানি শুরু করে।

খাদ্য ও সার রপ্তানির অনুমতি সংক্রান্ত একটি চুক্তি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি বলে কয়েক মাস ধরে অভিযোগ করে আসছিল রাশিয়া। কিন্তু বিষয়টিকে ইউক্রেন গুরুত্ব না দিলে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় রাশিয়া।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নির্দিষ্ট কিছু দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মস্কো এক বছরের পুরনো এই চুক্তিতে ফিরবে না।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.