ইউক্রেনের জ্বালানি খাতের মালিকানা চাইলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধে রাজি হয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর নিরাপত্তার জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি খাতের মালিকানা চেয়েছেন ট্রাম্প। ফোনালাপে যুদ্ধ নিয়ে ইতিবাচক ও খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ফোনালাপটি দুর্দান্ত হয়েছে।
চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরইমধ্যে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইউক্রেনের বিনা শর্তে রাজি হলেও বেঁকে বসে রাশিয়া। ফোনে দুই ঘণ্টার বেশি আলাপ করেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে পারেননি ট্রাম্প। তবে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোয় আঘাত না করার বিষয়ে রাজি হয় মস্কো।
গেল ২৮ ফেব্রুয়ারি ওভাল অফিসে রীতিমতো বাকবিতণ্ডায় জড়ান ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেও চির ধরে দুই দেশের মধ্যে। তবে যুদ্ধ বন্ধ কার্যকর করতে বুধবার (১৯ মার্চ )জেলেনস্কিকে ফোন করেন ট্রাম্প। যেখানে যুদ্ধ নিয়ে ইতিবাচক ও খোলামেলা আলোচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ইউক্রেন। আর ট্রাম্প বলেছেন তাদের ফোনালাপটি দুর্দান্ত হয়েছে।
রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের পাশাপাশি যুদ্ধ অবসানে সব ধরনের কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় এ বছরই যুদ্ধ বন্ধ করে স্থায়ী শান্তি অর্জন সম্ভব।
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, খোলামেলাভাবেই বলছি, ভূখণ্ডের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা নির্ধারণ করা সবচেয়ে কঠিন বিষয়। আমি জানি, এটি সমগ্র ইউক্রেনবাসীর জন্য চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ইউক্রেনকে রক্ষায় কাজ করবো। তবে এটি সহজ কাজ হবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও জানেন আইনত কোনও অঞ্চলকে রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দিব না।
নিরাপত্তার জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি খাতের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্র সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি। জবাবে জেলেনস্কি বলেন, জ্বালানি খাতের আধুনিকীকরণে বিনিয়োগ করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে।
গেল আগস্টে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কুরস্ক অঞ্চল দখলে নেয় ইউক্রেন। সম্প্রতি সেখানে হামলা জোরদার করে প্রায় সমগ্র অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করছে রাশিয়া। জেলেনস্কি জানান, কুরস্ক অঞ্চলে পূর্ণ আধিপত্য না পেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন না পুতিন। তবে এ বিষয়ে ট্রাম্পও তাকে কোনো চাপ দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন জেলেনস্কি।
এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ৩৭২ জন যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার পরও বন্ধ নেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি হামলা।