আমায় নিয়ে খারাপ কিছু লিখলে চুপচাপ থাকতাম: শর্মিলা

কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। বৈচিত্র্যময় এই শহরের পরিবেশ আর মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ তিনি।

চতুর্থবারের মতো ঢাকা সফর করছেন তিনি। কেমন কাটছে দিন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শর্মিলা ঠাকুর বলেন, ‘ধন্যবাদ এমন আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলাম বলে অনেক সিনেমা দেখতে হয়েছে। ফলে ব্যস্ত সময় কেটেছে। যে হোটেলটিতে উঠেছি, সেটিও সুন্দর! মনে হচ্ছে না কোনো হোটেলে উঠেছি। এ দেশের মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ। বেশ কিছু খাবারের আবদার করেছি। সবই পেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। একসঙ্গে ছবি তুলেছি। উৎসবের শেষ দিন পর্যন্ত ঢাকা থাকব। আশা করছি, ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরব।’

মধ্যবিত্ত মূল্যবোধে বড়ো হয়েছেন এই অভিনেত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিল্পকলার প্রতি টান তৈরি হয়েছিল পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেই। ঠাকুরমা আমার মেন্টর ছিলেন। মধ্যবিত্ত মূল্যবোধে বেড়ে উঠেছি। গাড়িতে চড়ে কোনো দিন স্কুলে যাইনি। বাসে যেতাম, কখনও হেঁটে ফিরতাম। বাবা বড়ো চাকরি করতেন, কিন্তু দূরে থাকতেন। আমি বড়ো হয়েছি একান্নবর্তী পরিবেশে। ঠাকুরমা খুব ভালো বাংলা বলতেন। শাড়ি পরতেন। ভালো রান্না করতেন। তাঁকে দেখেই অনেক কিছু শিখেছি।’

অভিনয় ক্যারিয়ারে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এমন কোনো চরিত্র আছে যে চরিত্রে অভিনয় করতে না পেরে আফসোস করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেউ হাস্যরসের চরিত্রে নেয়নি। কেন নেয়নি বলতে পারব না। সবাই শুধু কান্নাকাটি করা চরিত্র নিয়ে আসে! একজন অভিনয়শিল্পীর সব ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের ক্ষুধা থাকে। আমি পুরোপুরি একটি কমেডি সিনেমায় করতে চাই।’

সমালোচনাকে কীভাবে দেখেন এমন? প্রশ্নের উত্তরে শর্মিলা ঠাকুর বলেন, ‘আমি সমালোচনাকে কখনও পাত্তা দিইনি। তবে গঠনমূলক সমালোচনা মেনে নিই। আমার সম্পর্কে যখন অহেতুক কোনো লেখালেখি হতো, তখন খারাপ লাগত। যে ম্যাগাজিনগুলোতে লেখা হতো পড়তাম না। আমায় নিয়ে খারাপ কিছু লিখলে সবসময় চুপচাপ থাকতাম। জানতাম, এসব এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।’

শুরুটা বাংলা সিনেমা দিয়ে হলেও পরে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি পান শর্মিলা। তবে তিনি মনে করেন, সত্যজিৎ রায় যদি তাকে ‘অপুর সংসার’ সিনেমায় না নিতেন, তবে তার হয়েতো সিনেমায় ক্যারিয়ার হত না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অপুর সংসার সিনেমাটা যখন আমি করি, তখন স্কুলে পড়ি; বয়স ১৩ বছর। মানিকদা (সত্যজিৎ রায়) আমাকে সিনেমায় নিলেন। সেই সিনেমায় আমার চরিত্রটি পপুলার হলো। এ জন্য আমাকে সিনেমায় খুব একটা স্ট্রাগল করতে হয়নি। আমি বা আমার ফ্যামেলি চায়নি সিনেমায় কাজ করতে। যদি মানিকদা নিতেন, আমি হয়ত শান্তি নিকেতনে যেতাম।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.