আমার জীবনের টানাপড়েন, বিচ্ছেদ সবই খোলা বইয়ের মতো : সামান্থা

বিনোদন দুনিয়ায় যেখানে সব কিছুই খুব ঝাঁ চকচকে আর আপেক্ষিক, সেখানে নিজেকে ‘নির্ভেজাল’ রাখা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন সামান্থা রুথ প্রভু।

সম্প্রতি বেসরকারি এক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে নিজের সম্পর্ক, বিচ্ছেদ ও অসুস্থতা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করলেন দক্ষিণী এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ভক্ত তো বটেই, সবার উদ্দেশেই দিলেন বার্তা।

কোভিড-পরবর্তী সময়ে হঠাৎ সামনে এসেছিল সামান্থার বিচ্ছেদের কথা।

প্রথমে এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না আনলেও পরে ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট দিতে থাকেন। একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ কথা ফুটে ওঠে। সেখান থেকেই খানিকটা নিশ্চিত হওয়া যায় নাগা চৈতন্যর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। পরে অবশ্য এ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি।

সে সময় অটো ইমিউন ডিজিজ ‘ম্যোসিটিস’-এ ভুগছিলেন, সব মিলিয়ে মারাত্মক খারাপ অবস্থা হয়েছিল। মানসিকভাবে তো বটেই, একই সঙ্গে শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় সেরে উঠতে সময় লেগেছে। তাদের জীবনেও যে বিষাদ আসে, সে কথা লুকিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী।

সাক্ষাৎকারে সে নিয়েই দৃঢ় মতামত রাখলেন।

কিভাবে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডেও নিজেকে খাঁটি রাখা যায়, রাখা উচিত, বললেন তিনি।
নির্ভেজাল থাকতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই, অভিনেত্রী মনে করেন কখনো কখনো অথেনটিক, অর্থাৎ নির্ভেজাল থাকা যায় না। এই যায় আর যায় না চলতে থাকে প্রতিনিয়ত।

সামান্থা বলেন, ‘সব কিছু গোছানো নয়, জীবনে অনেক কিছুই এখনো গুলিয়ে আছে, কিন্তু আমি অন্তত সে বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারি। আমি নিখুঁত নই; ভুল করতে পারি, হোঁচট খেতে পারি, কিন্তু আমি চেষ্টা করছি আরো ভালো হতে।’

অভিনেত্রীর কথায়, তার ‘বাস্তবতা’ নিয়ে বোঝাপড়াটা এসেছে অভিজ্ঞতা থেকেই।

এরপর বললেন, ‘আমি নিজের জার্নির কথা বলতে পারি, অন্য কারো নয়। যারা আমার পথচলা দেখেছেন, তারা জানেন আমার ব্যক্তিগত জীবনের টানাপড়েন, বিচ্ছেদ, অসুস্থতা, সবই ছিল খোলা বইয়ের মতো ছিল। এর জন্য আমাকে অনেক সময় ট্রল হতে হয়েছে ও বিচার সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, এই সমস্যাগুলো দুর্বলতা নয়। সমস্যা হলে সেটা মিটবে একদিন।’

সাফল্যের সংজ্ঞা নিয়েও নিজের ভাবনা শেয়ার করেন সামান্থা। এই যুগে দাঁড়িয়ে তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী কিন্তু সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে উদ্দেশ্য থাকা জরুরি বলে মনে করেন। শুধু নাম বা খ্যাতির পিছনে দৌড়লে সেটা শূন্য।

বললেন, আমি অনেক পডকাস্ট শুনেছি, এমন মেন্টরদের কথা শুনেছি যারা আমার চিন্তাধারা পাল্টে দিয়েছে। আজ এই প্রজন্মের উচিত মেন্টর বাছাই করার সময় সাবধান হওয়া, কারণ ভুল পথপ্রদর্শক পুরো জীবন ঘুরিয়ে দিতে পারে।

জীবনে কেমন চলবে, কিভাবে তাকে চালানো যাবে এটা নির্ভর করে একজন কিভাবে বড় হচ্ছেন তার ওপর, মনে করেন অভিনেত্রী। শিকড় ভোলেন না, ভুলে যাওয়ার পক্ষপাতীও নন।

সবশেষে সামান্থা উল্লেখ করেন, ‘আমি খুব সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছি। তখন আমাদের টেবিলে খাবার তুলতেও কষ্ট হতো। পরে নাম, খ্যাতি, অর্থ সব পেয়েছি। কিন্তু সেই সব কিছুই এক সময় বিভ্রান্ত করেছিল। মূল্যবোধের সঙ্গে আপস করিনি তাই এখনো টিকে আছি।’

You might also like

Comments are closed.