‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, ভাইরাল
‘কে কী করেছে, কে আওয়ামী লীগ করেছে, সেটা না। সবাই আমাদের মানুষ। সবাই চৌরঙ্গীর মানুষ। এদের পুলিশ অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের কাছে অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এর বাইরে যদি একটা মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়, আমরা থানা ঘেরাও করব সবাই মিলে। কিডা কোন দল করেছে, এটা দেখার বিষয় না।’
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় এমন কথা বলেন সরকারি কর্মকর্তা শেখ রাসেল। অনেকেই তার বক্তব্য ফেসবুকে লাইভ করেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এলাকায় ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই বক্তব্য দিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া শেখ রাসেল বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে কর্মরত। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুষ্টিয়া–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর উপস্থিতিতে তিনি এ বক্তব্য দেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে শেখ রাসেলকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমরা অনেক অন্যায় করেছি। আমরা ছোট ছিলাম। আমরা বুঝিনি। আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের সঙ্গে থাকেন। আর একটা অন্যায়ও আমাদের দ্বারা হবে না। মেহেদী রুমীর নেতৃত্বে শেখ সদর উদ্দিনের স্বপ্নের চৌরঙ্গী গড়ার ইচ্ছা আমার। আমাদের সঙ্গে থাকেন।’
এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ রাসেল বলেন, ‘বক্তব্যটার মাধ্যমে আমি বোঝাতে চেয়েছি, কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়। তারপরও যদি অন্য কিছু বলে থাকি, তা হলো স্লিপ অব টাং।’
তবে বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। বিএনপি তা সমর্থন করে না।’
‘এমন বক্তব্য দেওয়া উচিত হয়নি’ মন্তব্য করে কুমারখালী থানার ওসি সোলায়মান শেখ বলেন, ‘পুলিশ কারও কথামতো চলবে না। পুলিশ তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।’
কুষ্টিয়ায় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শেখ রাসেল। ছবি: সংগৃহীত
অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মোল্লা, যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ প্রমুখ। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পান্টি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ রেজাউল করিম মিলনের ভাই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর সামনেই এমন বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন বক্তব্য কেন দিয়েছ? সে তার ভুল স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’