আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.)
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ। সমগ্র মানবজাতির শিরোমণি মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন আজ। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল শেষ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মা আমিনার কোলে জন্ম নেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের এ দিনে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ওফাত লাভ করেন। বিশ্বের মুসলমানরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি বা সিরাতুন্নবি (সা.) হিসাবে পালন করেন। বাংলাদেশে আজ রাষ্ট্রীয় ছুটি।
পবিত্র এ দিনটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। দিনটি উপলক্ষ্যে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সশস্ত্র বাহিনীর সব স্থাপনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জাতীয় পতাকা ও ‘কালিমা তায়্যিবা’ অঙ্কিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কদ্বীপ ও লাইটপোস্টে টানানো হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় আলোকসজ্জা করা হবে।
দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোয় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধনিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময়কেন্দ্রে আজ উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোয় যথাযথভাবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) পালন করা হবে। দিনটি উদযাপনে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) ১৪৪৪ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। শনিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত পক্ষকালব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মানবতার মুক্তিদাতা ও ত্রাণকর্তা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। মহানবি (সা.) থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করলে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি হয়ে উঠবে উন্নত, সমৃদ্ধ, শান্তি ও কল্যাণময়। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে দৃষ্টান্ত আমাদের দেশে আছে তা হতে পারে আরও সুসংহত ও সুদৃঢ়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার। আলোচক ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও দারুল উলুম রামপুরা বনশ্রী মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান।
এর আগে বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ চত্বরে মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলার উদ্বোধন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধে পবিত্র কোরআনখানি, দোয়া মাহফিল, ১৫ দিনব্যাপী ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, বাংলাদেশ বেতারের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় সেমিনার, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, ক্বিরাআত মাহফিল, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্কুলে নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনবিষয়ক সেমিনার, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ। অন্যদিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) ১৪৪৪ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫০টি ইসলামিক মিশন ও ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।