আজ থেকে খুলছে অফিস-দোকানপাট, চলছে গণপরিবহন
ঈদুল আজহার পর টানা ১৯ দিনের বিধিনিষেধ তথা ‘লকডাউন’ শেষে বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে গণপরিবহন। এদিন থেকে অফিস-আদালত এবং দোকান-পাট ও শপিংমলও খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে সবকিছু উন্মুক্ত হলেও সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধান ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি নিশ্চিত করতে কঠোরতা দেখাবে সরকার।
১১ আগস্ট থেকে সব সরকারি-আধাসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাট ও শপিংমল এবং গণপরিবহন চালু রাখার অনুমতি দিয়ে গত রবিবার (৮ আগস্ট) প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মোট পরিবহনের অর্ধেক চলাচল করবে। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় প্রশাসন অর্ধেক বাস চলাচলের সংখ্যা ঠিক করবে, দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। দুই আসনে এক যাত্রী এবং ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির বিধানও থাকছে না। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের ভাড়ায় ফিরে যাচ্ছে গণপরিবহন।
করোনা রোধে গত ০১ জুলাই থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয়। ঈদের সময় আটদিন বিরতি দিয়ে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। এই সময়ে গণপরিবহন, অফিস এবং দোকান-পাট বন্ধ রাখা হয়। তবে এরই মধ্যে গত ০১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বিধি-নিষেধ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ১১ আগস্ট থেকে অফিস-আদালাত ও দোকান-পাট চালুর পাশাপাশি নির্দিষ্ট রুটে অর্ধেক গণপরিবহন চলবে। তবে আসনের সমপরিমাণ যাত্রী বহন করতে পারবে সড়ক পথের গণপরিবহন তথা বাস। কিন্তু অর্ধেক বাস চলা নিয়ে নানা সমালোচনারও তৈরি হয়েছে।
বিধি-নিষেধ শিথিল করা হলেও সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে কঠোর হওয়ার কথা জানানো হয়।
১১ আগস্ট থেকে যা মানতে হবে-
১. সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক খোলা থাকবে।
২. সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৩. সড়ক, রেল ও নৌপথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল, মার্কেট, দোকান-পাটসমূহ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে।
৫. সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।