ছেলে হলে আজান আর মেয়ে হলে রোজা নাম রাখার ইচ্ছে ছিল আল আমিনের। তার ইচ্ছে পূরণ হয়েছে; মেয়ের নাম রাখা হয়েছে রোজা আক্তার। আল আমিন বাবা হয়েছেন কিন্তু সন্তানের মুখ দেখতে পারেননি না। সন্তানও উঠতে পারেনি বাবার কোলে। কাকে বাবা বলে ডাকবে রোজা?- বলছি জুলাই ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বরিশালের বানারীপাড়ার বেতাল গ্রামের আল আমিন রনির সদ্যজাত মেয়ের কথা।
নভেম্বরে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন আল-আমিনের স্ত্রী মিম আক্তার। তবে বাবাহারা এই সন্তানকে নিয়ে কীভাবে টিকে থাকবেন সেই দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই মা।
আল-অমিনের স্ত্রী মিম বলেন, আমার মেয়ের জন্মের আগে ওর বাবা শহীদ হয়েছেন। সরকার আমার মেয়ের পাশে থাকবে এটাই আমার চাওয়া।
বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর পূর্ব বেতাল গ্রামের বাসিন্দা বাবাহারা আল আমিন রনি ছিলেন তেজগাওয়ের মাল্টিব্রান্ড ওয়ার্কশপের কর্মচারী। মা মেরিনা বেগম,অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মিম ও ছোট ভাই আবদুর রহিমকে নিয়ে মহাখালী সাততলার কাছে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গত ১৯ জুলাই দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন আল-আমিন। ওই দিন বিকেলে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাণ হারান।
এদিকে, রনির পরিবারে এখনো স্বজনহারা কান্না। আদরের নাতিকে হারিয়ে শোকে কাতর শতবর্ষী দাদি মরিয়ম বিবি ও মা মেরিনা বেগম। রনির বাড়িতে গেল সবচেয়ে বেশি আক্ষেপ শোনা যায় দাদির। নাতিকে হারানোর পর তার সব স্বপ্ন ফিকে হয়ে গেছে। রনি চিরনিদ্রায় শায়িত নিজ গ্রামের বাড়ির উঠোনে। সেখানেই দিনের প্রায় সময় বসে থাকেন দাদি আর মা।