আগারগাঁও সড়কে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিক্ষোভ

সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আগারগাঁওয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতরা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। শনিবার ( ১ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকেই তারা সড়কে নেমে এসে বিক্ষোভ করছেন।

রবিবার আগারগাঁওয়ে টিবি হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়েছেন আহত ব্যক্তি ও তাদের স্বজনেরা। দুই পাশে রাস্তা বন্ধ থাকায় যান চলাচল বন্ধ আছে, এতে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।

এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নেমে আসেন। এতে আগারগাঁও থেকে শিশু মেলা লিংক রোড হয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। কেবলমাত্র অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত স্বাভাবিক দেখা গেছে।

শনিবার রাতে শ্যামলীতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা | ছবি: সংগৃহীত

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শতাধিক ব্যক্তি রাস্তায় নেমে আসেন।

কেউ কেউ আসেন লাঠি ভর করে। দাবি আদায়ে তাদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। অনেকে রাস্তায় শুয়ে স্লোগান দেন।

গত বছরের ১৯ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর সেকশন গোলচত্বরে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম। ৩০ বছর বয়সী এই যুবকের বাম চোখে গুলি লাগে। বর্তমানে তিনি জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমার চোখে তিনবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। বাম চোখে এখনো আমি ঝাপসা দেখি। ধীরে ধীরে ডান চোখেও কম দেখছি। আমাদের উন্নত চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। আমার দৃষ্টি কমে আসছে, অথচ সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।’

রফিকুল আরও বলেন, ‘এখানে যে চিকিৎসা পাচ্ছি, সেটা পর্যাপ্ত না। আমরা দেশের প্রয়োজনে আহত হয়েছি, অনেকের অঙ্গহানী হয়েছে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। কেবল মুখে মুখে প্রতিশ্রুতি আমরা চাই না।’

হাসপাতালের সামনে রাস্তায় টুল পেতে বসে ছিলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তাঁত শ্রমিক মো. ইমরান। গত ৪ আগস্ট পুলিশের গুলিতে তার ডান পায়ের হাড় ভেঙে যায়।

প্রথমে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এরপর ঢাকার আরেকটি হাসপাতাল ঘুরে গত ১৪ ডিসেম্বর আসেন পঙ্গু হাসপাতালে। ইমরান বলেন, ‘আমি কবে সুস্থ হতে পারবো সেটা অনিশ্চিত। আমার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। মাসে ১৫ হাজার টাকা আয় করতাম, সেই টাকায় পরিবার চলতো। এখন আমার সঙ্গে পরিবারও ভুগছে।’

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.