আকিকা না দিলে আসলেই সন্তানের ওপর বিপদ-আপদ লেগে থাকে?
বাবা-মায়ের জন্য মহান রবের দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার সন্তান। এজন্য শিশুর জন্মের পর আকিকা করতে হয়। সেই সঙ্গে পশু জবাই করে আল্লাহ তা’য়ালার শুকরিয়া আদায় করতে হয়।
সালমান ইবনু আমির (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, সন্তানের সঙ্গে আকিকা সম্পর্কিত। তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত (অর্থাৎ আকিকার পশু জবেহ) কর এবং তার (সন্তান) অশুচি (চুল, নখ ইত্যাদি) দূর করে দাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০৭৬)
আরেকটি হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনে তার নাম রাখতে, মাথা মুণ্ডন করতে এবং আকিকা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ২৮৩২)
এ ক্ষেত্রে ছেলে সন্তান হলে দু’টি ও মেয়ে সন্তান হলে একটি পশু কুরবানি দিতে হয়। ইসলামিক স্কলার মিজানুর রহমান আজহারীর মতে, আকিকা সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন- ছেলে হলে দু’টি ছাগল দিয়ে আকিকা করো। আর যদি মেয়ে হয় তাহলে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করো। অন্যদিকে আকিকার ক্ষেত্রে সুন্নত হলো- সন্তান ভূমিষ্ঠের ৭ দিন পর আকিকা করা। সপ্তম দিনে সন্তানের মাথার চুল ফেলে দিতে হয় এবং তার একটি সুন্দর নাম রাখতে হয়।
অনেকেই বলে থাকেন আকিকার পশু শুধুমাত্র নর হতে হবে। কিন্তু হাদিসে নির্দিষ্টভাবে এমন নির্দেশনা আসেনি। উম্মু কুরয রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তখন তিনি (নবীজি সা.) বললেন, ছেলের জন্য দুটো ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল আকিকা দিতে হবে। আকিকার পশু নর হোক বা মাদী হোক তোমাদের কোনো ক্ষতি (গুনাহ) হবে না। (সুনাত আত তিরমিজি, হাদিস: ১৫২২)
তবে আকিকার ক্ষেত্রে অনেকেই বলে থাকেন কেউ যদি সন্তানের আকিকা না দেন তাহলে সন্তানের ক্ষতি হয়। বিশেষ করে সন্তানের ওপর বিপদ-আপদ লেগেই থাকে। আসলেই কী এমন?
ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ’র মতে, ছেলে-মেয়েদের আকিকা করা অনেকটা লাইফ ইনস্যুরেন্সের মতো। সেই জায়গা থেকে সন্তানের নিরাপত্তার জন্য এটা করা উচিত। কিন্তু আকিকা না দিলে সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন কোনো কথা হাদিসে আসেনি। তবে নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সাধ্য অনুযায়ী আকিকা করা উচিত।

Comments are closed.