অস্ট্রেলিয়ায় শিশু-কিশোরদের জন্য আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করার নিয়ম আজ থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন নীতিমালায় টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাট–সব প্ল্যাটফর্মই কিশোরদের অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভেট করা শুরু করেছে। বয়স ১৬ পূর্ণ করে পরিচয় যাচাই করার পর এসব অ্যাকাউন্ট আবার চালু করা যাবে। গত বছরের ২৮ নভেম্বর পার্লামেন্টে এ বিষয়ে একটি আইন পাশ হলেও অবশেষে এবার তা কার্যকর হলো। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে ইউএস সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।

 

 

দেশটির সরকার এরইমধ্যে সতর্ক করে জানিয়েছে, বয়সসীমা অতিক্রম না করা শিশুরা যেসব ‘এইজ রেস্ট্রিক্টেড’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, সেগুলোকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। যদি কোন প্ল্যাটফর্ম যথাযথ মনিটরিং করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর লাখ লাখ ডলার জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।

এই বিধিনিষেধের আওতায় থাকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে স্ন্যাপচ্যাট, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, কিক, রেডডিট, থ্রেডস, টিকটক, এক্স এবং ইউটিউব।

তবে, কিশোরদের বয়স কীভাবে বের করা হবে এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কারণ—সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ১৬ বছরের কম বয়সীরা মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারে।

 

 

এই নীতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন টিকটকের যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ অঞ্চলের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার রিচার্ড ওয়াটারওর্থ অস্ট্রেলিয়ার নতুন সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এই নীতিমালা ‘কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না’ এবং এতে রয়েছে নানা ধরনের ফাঁকফোকর।

ওয়াটারওর্থের আশঙ্কা—

 

‘অনেক শিশু তাদের বয়স নিয়ে মিথ্যা বলবে,’ আর এতে তারা প্ল্যাটফর্মগুলোর সেফটি টুলস থেকেও বঞ্চিত হবে। কারণ বয়স নিশ্চিত করতে প্ল্যাটফর্মগুলোকে বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহ করতে হবে। আর সাধারণ মানুষ চায় না যে এসব কোম্পানির কাছে তাদের বায়োমেট্রিক তথ্য জমা থাকুক।

 

ওয়াটারওর্থের ভাষায়, এই নিষেধাজ্ঞা হলো ‘ম্যাজিকাল থিংকিং সল্যুশন’—যা বাস্তবসম্মত নয়। তার মন্তব্য, ‘আমি মনে করি না এই সিদ্ধান্ত শিশু-কিশোরদের নিরাপত্তার জন্য দারুণ কিছু বরং এটি লোক দেখানো।

 

 

টেক কোম্পানিগুলো কীভাবে জানবে কে ১৫ আর কে ১৬ বছরের? নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, সেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কোম্পানিগুলোকে। তারা অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীর পুরোনো আচরণ যাচাই করবে। কখন অ্যাপ ব্যবহার করা হয়, সেটিও যাচাই করা হবে। এছাড়াও কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, এমনকি কণ্ঠ কেমন, চেহারা বা ছবিরও বিশ্লেষণ করবে। তবে শর্ত হলো, কোনো ব্যবহারকারীর সরকারি পরিচয়পত্র চাইতে পারবে না প্ল্যাটফর্মগুলো।

You might also like

Comments are closed.