অবৈধ অভিবাসীদের ‘গুয়ানতানামো’ বানাবেন ট্রাম্প!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি নতুন ‘গুয়ানতানামো’ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে অবৈধ অভিবাসীদের আটকে রাখতে চান নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, সেখানে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশী অপরাধীদের স্থান দেওয়া হবে, যারা মার্কিন জনগণের জন্য হুমকি।
কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগারের পাশেই নির্মিত হবে ৩০ হাজার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই নতুন ডিটেনশন সেন্টার।
কিউবার মার্কিন নৌঘাঁটিতে এই ডিটেনশন সেন্টারটি এর আগে স্থাপিত উচ্চমাত্রায় সুরক্ষিত গুয়ানতানামো বে সামরিক কারাগার থেকে পৃথক একটি স্থাপনা হবে।
ল্যাকেন রাইলি আইনে সইয়ের পর তা সাংবাদিকদের দেখাচ্ছেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার (২৯ জানুয়ারি)ট্রাম্পের অভিবাসন কর্মকর্তা টম হোমান জানান, বিদ্যমান অবকাঠামোর সম্প্রসারণ করা হবে এবং সম্প্রসারিত অংশের দেখভাল করবে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এজেন্সি।
১১ নভেম্বর হোমানকে নিয়োগ দেওয়ার সময় সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে তাকে ‘সীমান্ত সম্রাট’ (বর্ডার জার) নামে অভিহিত করেন ট্রাম্প।
হোমান জানান, সমুদ্রে মার্কিন কোস্ট গার্ডের হাতে যেসব অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশী ধরা পড়বেন, তাদেরকে সরাসরি সেখানে স্থানান্তর করা হবে এবং তাদেরকে আটকের ক্ষেত্রে কঠোরতম নীতি অবলম্বন করা হবে। এই অবকাঠামো নির্মাণে কত খরচ হবে বা কবে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
কিউবার সরকার এই পরিকল্পনায় নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও অবৈধভাবে ‘অধিকৃত’ ভূমিতে কারাগার নির্মাণের অভিযোগ এনেছে।
গুয়ানতানামো বে কারাগার। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ট্রাম্প ল্যাকেন রাইলি অ্যাক্ট নামে একটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার জন্য সাক্ষর করেছেন।
এই আইনের আওতায় নথিবিহীন অভিবাসন প্রত্যাশীরা চুরি বা অন্য কোনো সহিংস অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার হলে বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার বিধান চালু করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে এ সংক্রান্ত একটি বিল কংগ্রেসে পাস হয়েছে। বিলটি জর্জিয়ার এক শিক্ষার্থীর নামে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি গত বছর ভেনিজুয়েলা থেকে আসা এক অভিবাসীর হাতে নিহত হন। এই বিল পাসকে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি প্রারম্ভিক বিজয়ের মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে বিলে সাক্ষর করা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, নতুন ‘গুয়ানতানামো নির্বাহী আদেশে প্রতিরক্ষা ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর ৩০ হাজার শয্যাবিশিষ্ট ওই কারাগার নির্মাণের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তাদের (অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশী) মধ্যে কয়েকজন এতোই নিকৃষ্ট যে আমরা এটুকুও ভরসা পাচ্ছি না যে তাদেরকে তাদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হলেও তাদেরকে আটকে রাখা সম্ভব হবে কি না। এ কারণে আমরা তাদেরকে গুয়ানতানামোয় পাঠাবো। এটি এমন একটি জায়গা, যেখান থেকে বের হয়ে আসা খুব কঠিন।’
গুয়ানতানামো বে কারাগার। এটি এমন একটি জায়গা, যেখান থেকে বের হয়ে আসা খুব কঠিন। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্পের মতে, এই অবকাঠামো নির্মাণে অবৈধ অভিবাসন প্রত্যাশীদের আটকে রাখার মার্কিন সক্ষমতা দ্বিগুণ হচ্ছে।