অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি স্পষ্টভাবে নাকচ করল নয়াদিল্লি
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে ভারতকে দোষারোপ করার ঘটনায় জবাব দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি স্পষ্টভাবে নাকচ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি। ভারত কখনও তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে দেয়নি।
ভারত আশা করে যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এসব কর্মকাণ্ডে ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও যুক্ত রয়েছে—যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের বাংলাদেশবিরোধী ও অপরাধমূলক তৎপরতা বন্ধে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনরা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে সীমান্ত দিয়ে তাদের পলায়ন রোধে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে কেউ ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকার আশা প্রকাশ করে বলেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
অন্যদিকে, বৈঠকে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায় এবং এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.